দীপঙ্কর মণ্ডল: অবিকল যেন রূপোলি পর্দার চিত্রনাট্য। সহায়সম্বলহীন দশা থেকে একেবারে মন্ত্রীর বাড়িয়ে দেওয়া হাত ধরে উঠে দাঁড়ানো। দরিদ্র মেধাবী ছাত্রের কাছে এ যেন স্বর্গপ্রাপ্তি। এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সঞ্জয় রবিদাস। দরিদ্র পরিবারের সন্তান জুতো পালিশ করে সংসার চালায় সে। বাবা নেই। মা অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি করতেন। কিন্তু লকডাউনে তা বন্ধ। কয়েক দিন প্রায় অনাহারে।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের এই পরিবারটির কথা এক শিক্ষকের মাধ্যমে জানতে পারেন রাজ্যের সেচ, পরিবহণ ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানতে পারেন, ওই ছাত্র কনুয়া হাই স্কুলের ‘ফার্স্ট বয়।’ সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কুড়ি হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন মন্ত্রী। ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে তিনি সঞ্জয়কে আশ্বাস দিয়েছেন, উচ্চশিক্ষায় কোনও বাধা আসবে না। যে কোনও দরকারে তিনি পাশে আছেন, থাকবেন।
শুভেন্দুর এমন মানবিক ঘটনার নজির অজস্র। কয়েকদিন আগে উত্তরবঙ্গের এক মেধাবী পড়ুয়া সংসার চালাতে রাস্তায় ডিম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে জেনে তিনি পাশে দাঁড়ান। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দুস্থদের জন্য টন টন খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁকে যে শিক্ষক মালদার খবর দেন, তাঁর নাম রত্নদ্বীপ সামন্ত। তিনি জানিয়েছেন, “সারা দেশ লকডাউনের মাধ্যমে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল। অন্য লড়াই করছিল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক ১-এর কনুয়া হাইস্কুলের ফার্স্ট বয় সঞ্জয় রবিদাস। বিধবা মা অন্যের জমিতে চাষের কাজ করতেন। পড়াশোনার ফাঁকে সঞ্জয় জুতো পালিশ করে। সেলাইও করে। দুইই এখন বন্ধ। খবরটি মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে জানানো মাত্র তিনি পাশে দাঁড়ান।”
খবরটি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারেন কাঁথির বাদলপুর বিদ্যাভবনের শিক্ষক রত্নদ্বীপ। শুভেন্দুবাবুকে ছেলেটির সঙ্গে যোগাযোগও করিয়ে দেন। এরপরই সঞ্জয়দের অ্যাকাউন্টে আর্থিক সাহায্য পাঠিয়ে দেন মন্ত্রী। ভবিষ্যতেও তাঁর পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন। মন্ত্রীর বাড়ানো হাত ধরে কিছুটা যেন উঠে দাঁড়াচ্ছে দরিদ্র পরিবারের এই মেধাবী ছাত্র। ভরসা পেয়ে আপ্লুত সঞ্জয় জানিয়েছে, “আমি ভাবতেও পারিনি, সুদূর পূর্ব মেদিনীপুর থেকে মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামে কোনও জনপ্রতিনিধি এই দুর্দিনে আমার পাশে এসে দাঁড়াবেন। আমি কৃতজ্ঞ ওনার কাছে।” শিক্ষক রত্নদ্বীপ বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী শুধুমাত্র মন্ত্রী নন। বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে যে প্রকৃত অর্থেই উনি একজন জননেতা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.