কৃষ্ণকুমার দাস, তমলুক: শেষ বেলার প্রচারে গোটা তমলুক ও কাঁথিতেই প্রচারে ঝড় তুললেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে নিজের ‘ভদ্রাসন’ হিসাবে পরিচিতি দেন। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে দলের অর্পিত দায়িত্ব সামলেছেন এতদিন। এবার তাঁর দায়িত্ব বাবা ও ভাইয়ের জয় নিশ্চিত করা। ভুল বলা হল। এবার দায়িত্ব ওই দুই কেন্দ্রেই তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান বাড়ানো। এবং সে ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত শুভেন্দু। প্রচারে বারবার টেনে আনছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের কথা। ফিরিস্তি দিচ্ছেন সেই কাজের। শুভেন্দু বললেন, “উন্নয়ন কীভাবে করতে হয়, আমি মমতাদির কাছ থেকে শিখেছি। মমতাদির চিন্তাধারা-ভাবধারাকে রেখেই উন্নয়ন করে চলেছি।” পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের সন্তান শুভেন্দু বিজেপির ‘ছদ্ম দেশপ্রেম’ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। ঠাকুরদা কেনারাম অধিকারী লবণ সত্যাগ্রহে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শিশির অধিকারীর কাকা বিপিন অধিকারী ব্রিটিশ জেলে জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। এহেন অধিকারী পরিবারের সন্তান শুভেন্দু বলছেন, “মেদিনীপুর স্বাধীনতা সংগ্রামের জেলা, পীঠস্থান। সতীশ সামন্ত, অজয় মুখোপাধ্যায়, কুমুদিনী ডাকুয়ার জেলা। মাতঙ্গিনীর ভূমি। সম্প্রীতি ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হয় না। বহিরাগতরা এসে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, মেদিনীপুর জেলা ও বাংলাই ব্রিটিশদের তাড়িয়েছে। ওঁরা স্বাধীনতা ও দেশের কথা কি বলবে? আমরাই ভারতমাতা কী জয় বলব।”
বৃহস্পতিবার কাঁথি ও তমলুক লোকসভা কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ৯টি সভা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । এর মধ্যে তমলুকেই সাতটি ও কাঁথিতে দু’টি। দুই কেন্দ্রে প্রার্থী ভাই দিব্যেন্দু ও বাবা শিশির অধিকারী। শুক্রবার শেষ প্রচারে খুব সকালেই শুভেন্দু পৌঁছে যান মেচেদায়। এটি তমলুক কেন্দ্রের অন্তর্গত। জাতীয় সড়কের পাশে বাজারে বর্ণময় রোড শো করেন। বিকেলে অবশ্য নন্দকুমার থেকে নরঘাট পর্যন্ত আবারও বিশাল বর্ণময় র্যালি। প্রতিটি র্যালিতেই মহিলা ও ছাত্র-যুবর প্রচুর ভিড়। প্রচারে কলকাতা থেকে দিঘা পর্যন্ত রাস্তা চওড়া করা থেকে শুরু করে উন্নয়ন কাজের দীর্ঘ তালিকা পেশ করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। গত ৩১ জানুয়ারি এখানে মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়েছে। মহিষাদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে মেডিক্যাল কলেজও হয়েছে। দুই কেন্দ্রেই শেষ প্রচার করেন পারিবারিক প্রথা মেনে কাথির দারুয়ার করাবালা ময়দানে। এখানে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। এই কারবালা ময়দানেই রথ হয়। মহরম হয়। আবার গান্ধী মেলাও হয়।
ছবি: সৈকত মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.