ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) সঙ্গে রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সংঘাত নতুন নয়। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জনও কম হয়নি। তারই মাঝে এবার তাঁর নামে পোষ্টার পড়ল মন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে। যা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সোমবার সকালে মঙ্গলকোটের নতুনহাটে কৃষিমান্ডির গেটের পাশে এই পোষ্টার দেখতে পান স্থানীয়রা। তাতে মন্ত্রীর ছবির সঙ্গে রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর ছবি। লেখা রয়েছে, “আমরা দুই দাদার অনুগামী।অধীর চৌধুরী ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে (Siddiqullah Chowdhury) আমরা এক সঙ্গে দেখতে চাই।” তলায় উল্লেখ রয়েছে মঙ্গলকোট অঞ্চল কংগ্রেস। পোষ্টারের উপর জাতীয় কংগ্রেসের প্রতীক হাতের চিহ্ন। আর এই পোষ্টার প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কী এবার খোদ গ্রন্থাগারমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন? এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমি জানি এটা কারা করতে পারে। তবে কারও নাম করতে রাজি নই। এটা আমাকে একটু চমকানোর চেষ্টা। এটা যারা করেছে তারা নিজেদের আখের গোছাতে চায়।” মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী নাম না করলেও তার ঈঙ্গিত কিন্তু নিজের দলের একাংশের দিকেই, রাজনৈতিক মহলের মত অন্তত এমনটাই।
প্রসঙ্গত, কাটোয়া এলাকায় বাসিন্দা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ছিলেন জমিয়তে উলেমা হিন্দের সক্রিয় একজন কর্মকর্তা। পরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন। দল তাকে ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে মঙ্গলকোটের প্রার্থী করে। জয়লাভের পর মন্ত্রিত্ব পান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। কিন্তু মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক রাশ বরাবরই অনুব্রত মণ্ডলের হাতে রয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীদের সঙ্গে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর দ্বন্দ্ব প্রথম থেকেই চলে আসছে। সম্প্রতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে একাধিকবার মুখ খুলেছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) ছবি দেওয়া পোষ্টার পড়ার ঘটনায় দলের একাংশের দিকেই সন্দেহের তির মন্ত্রীরও। তাঁর যুক্তি, “মঙ্গলকোটে কংগ্রেস আদৌ শক্তিশালী নয়। সিপিএমের কিছুটা সংগঠন রয়েছে।তবে কংগ্রেস এমন কাঁচা কাজ করবে না।”
একসময় মঙ্গলকোটে খুব একটা দেখা যেত না মন্ত্রীকে।ইদানীং তিনি প্রায়ই আসছেন। তাই তাকে চাপে রাখতেই এই পোষ্টার বলে মনে করছেন সিদ্দিকুল্লা অনুগামীরা। তবে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “আমি যাদের ভোটে জিতেছি তাদের প্রতি আমার দায়দায়িত্ব আছে। তাই উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখতে আমাকে এলাকায় আসতেই হবে। তাতে কার সমস্যা হচ্ছে আমার দেখার প্রয়োজন নেই। আমি আমার দায়িত্ব পালন করব।” মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীও এই বিষয়টি গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “এখন তো বাজারে পোষ্টার ইস্যু একটা খোরাক হয়ে গিয়েছে। এসবের কোনও গুরুত্ব নেই। ওই ধরনের পোষ্টার আমার নজরে পড়েনি।” অপরদিকে স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বও এই পোষ্টারের দায় নিতে অস্বীকার করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.