দেব গোস্বামী, বোলপুর : শীতের মরশুমের শুরুতেই পরিযায়ী পাখিরা ভিড় করত শান্তিনিকেতনের জলাশয়গুলিতে। কিন্তু চলতি বছরে তেমনভাবে পরিযায়ী পাখিদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। জলাশয়গুলিতে দূষণ বাড়ছে। সেই কারণেই পাখির সংখ্যা কমছে। তেমনই মনে করছে বন দপ্তরের আধিকারিকরা।
প্রতি বছর শীতের শুরুতেই ইউরোপ, মোঙ্গোলিয়া, সুদূর সাইবেরিয়া সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিযায়ী পাখির দল হাজির হত শান্তিনিকেতনে। বল্লভপুরের তিনটি ঝিল ও লালবাঁধের পাড়ে তারা সাধারণত বাসা বাঁধে। নর্দান পিনাটেল, গ্যাডওয়াল, নব ডাক-সহ বহু ধরনের পরিযায়ী পাখিদের শান্তিনিকেতনে দেখা মেলে গোটা শীতকাল জুড়েই। পাখি দেখতে ভিড় করেন বহু মানুষ। কিন্তু এবার ডিসেম্বরের মাঝামাঝি হলেও পরিযায়ী পাখির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। পরিবেশকর্মীদের আক্ষেপ, সংস্কারের অভাব ও দূষণের জেরেই এলাকার ঝিলগুলি থেকে মুখ ফিরিয়েছে ভিনদেশি পাখির দল। কোথাও জল নেই, কোথাও বা বেড়েছে জঞ্জাল-সহ কচুরিপানা। এছাড়াও জেলা পুলিশের কড়া হুঁশিয়ারি, শান্তিনিকেতন থানার নজরদারির সত্ত্বেও থামানো যায়নি শব্দ দৌরাত্ম্য।
বোলপুর বন দপ্তরের আধিকারিক জ্যোতিষ বর্মন জানান, “পরিযায়ীরা একেবারে আসছে না, তা ঠিক নয়। পাখিদের যাতে কেউ বিরক্ত না করে সেই কারণেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সচেতনও করা হচ্ছে পর্যটকদের।” তিনি আরও বলেন, “ঝিল সংস্কার ও বল্লভপুর অভয়ারণ্যকে ঢেলে সাজানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।”
বিশ্বভারতীর গবেষক পড়ুয়া সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বন দপ্তরের নজরদারি থাকলেও পরিযায়ী পাখিদের বাসা বাঁধার মতো পরিবেশ নেই। গাড়ির হর্ন, হই-হুল্লোড়, ডিজে বক্সের আওয়াজ পাখিদের বড় আতঙ্কের কারণ।” এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন পশুপ্রেমীরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.