ছবি: প্রতীকী
নিজস্ব সংবাদদাতা, লালবাগ: আগের রাতেই প্রসব যন্ত্রণা। ভূমিষ্ঠ হল সন্তান। কিন্তু পরদিন যে অঙ্ক পরীক্ষা তার কী হবে? হতেই হবে। পরীক্ষায় বসতেই হবে। অদম্য শক্তি ও মনের জোর সম্বল করে সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় দিল সাথী খাতুন। হাসপাতালের শয্যায় বসেই যাতে সাথী পরীক্ষা দিতে পারে। সেই ব্যবস্থা করে দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা দেওয়ার পর সাথী বলে, ‘‘পরীক্ষা ভালই দিয়েছি। আর মেয়ের নাম রাখব অঙ্ক।’’
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ছিল মাধ্যমিকের গণিত অর্থাৎ অঙ্ক পরীক্ষা। বুধবার রাতে রানিতলা থানার সরলপুর গ্রামের বাসিন্দা সাথী খাতুনের প্রসব যন্ত্রণা উঠলে তাকে নসিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভরতি করা হয়। সেখানে ওই রাতেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় নসিপুর হাই স্কুলের ওই ছাত্রী।
সাথীর পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল আখেরিগঞ্জ হাই স্কুলে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সদস্য মা হয়েছে। এই খবর দেওয়া হয় পরীক্ষাকেন্দ্রের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে। পর্ষদের নিয়ম মেনে হাসপাতালে তার পরীক্ষার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। এদিন ওই ছাত্রীর পরীক্ষার সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষিকা স্নিগ্ধা ঘোষ।
শিক্ষিকা জানান বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহের ফলেই ওই পরীক্ষার্থীকে এমন সমস্যার মুখে পড়তে হল।’’ ছাত্রীর মা তেজমুন বিবি বলেন, ‘‘দিন আনা-দিন খাওয়া পরিবারে ছয় ছেলে-মেয়ের ভারেই বাধ্য হয়ে মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়ে পড়া ছাড়বে না বলে জানিয়ে দেয়।’’ এক বছর আগে পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে বিয়ে হয় সাথী খাতুনের। স্বামী এখন মাটির কাজ করে সংসার চালান। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে সংসার চলবে, সাথী জানে না। কিন্তু পড়াশোনা চালিয়ে যাবে বলেই জানিয়েছে সে। মেয়ের নাম রাখবে অঙ্ক। যাতে সেও নিজের জন্মের গুরুত্ব বুঝতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.