রাজ্যে একের পর এক বিভিন্ন স্কুলে মিড-ডে মিলের বেহাল দশার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও আবার দেখা গিয়েছে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে খুদেদের পেটভরে খাওয়াচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। কী অবস্থা রাজ্যের বাকি স্কুলগুলির? চালচিত্র দেখতে পৌঁছে গেল সংবাদ প্রতিদিন.ইন।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মিড-ডে মিল নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। কোথাও মিড-ডে মিল রান্নার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। কোথাও আবার স্কুলের ঘরই নেই। কোনওক্রমে ত্রিপল টাঙিয়েই চলে স্কুল। এরই মাঝে অন্যছবি দেখা গেল কেশপুরে। যেখানে আকর্ষণীয় শ্রেণিকক্ষ আর মিড-ডে মিলের টানেই প্রতিদিন পড়ুয়ারা ভিড় জমায় স্কুলে। স্কুলছুট হওয়ার কথা ভাবতেই হয় না শিক্ষকদের। বরং কী ভাবে স্কুলকে আরও সুন্দর করা যায় সেই ভাবনাই ভাবছেন কেশপুরের রাঙাদিঘি প্রাথমিক স্কুলের দুই শিক্ষক।
১৯৭২ সাল থেকে পথচলা শুরু কেশপুর ১০ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত এই স্কুলের। জীর্ণ স্কুল বিল্ডিংয়ের পাশে সরকারি টাকায় তৈরি হয়েছে নতুন দুটি শ্রেণিকক্ষ, রান্নার জায়গা, স্টোর রুম। ভেঙে পড়ার ভয়ে পুরনো শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠন হয় না। নতুন দুটি শ্রেণিকক্ষে চলছে পঠন পাঠন। বর্তমানে ছাত্র সংখা ৭১। বিশেষ অসুবিধে ছাড়া অধিকাংশই প্রতিদিন স্কুলে আসে। সেই ক্লাসরুমে ঢুকেই অবাক হতে হবে আপনাকেও। এক নজরে সবই আছে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে। প্রাথমিক শিক্ষায় সম্যক ধারণা তৈরি করার জন্য ছবি, ছড়া-সহ কোনও কিছুর অভাব নেই।স্কুলে রয়েছে লাইব্রেরি, সুলভ মূল্যের শিক্ষার সামগ্রী কেনার ব্যবস্থা। নিয়মিত স্কুলে প্রকাশিত হয় দেওয়াল পত্রিকা। সেইসঙ্গে নিয়মিত মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা তো রয়েছেই। আর এই সাজানো শ্রেণিকক্ষ আর মিড-ডে মিলের আকর্ষণেই প্রতিদিন স্কুলে আসে খুদে পড়ুয়ারা।
এ প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘স্কুলে পাঁচিল নেই। আরও শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। তবুও স্কুলটিকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন দুই শিক্ষক অমিত কুমার রানা ও পবিত্র বসু।’ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমিত কুমার রানা বলেন, ‘অনেক কিছু প্রয়োজন। এর মধ্যেও স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় স্কুলটিকে সুন্দর করে তোলার চেষ্টা করছি’। অভিভাবক থেকে বিদ্যালয় পরিদর্শক সকলেই কৃতিত্ব দিয়েছেন শিক্ষকদের। শিক্ষকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেশপুর চক্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক। তিনি বলেন, ‘আমরা সমস্ত স্কুলকেই সুন্দর করতে বলি। কিন্তু রাঙাদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে ভাবে নিজেদের উদ্যোগে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন তা সত্যি অভিনন্দন যোগ্য।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘এর জন্য কোনও বাড়তি টাকা বরাদ্দ করা হয় না স্কুলকে। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে স্কুলকে সাজিয়েছেন। পুরোটা শিক্ষকদের নিজেদের উদ্যোগে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.