ছবি: প্রতীকী
টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: আইসোলেশন ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্টের কারণে চিকিৎসাধীন দুই রোগীর মৃতদেহ তড়িঘড়ি দাহ করায় বিতর্ক শুরু হয়েছিল বাঁকুড়ায়। শেষে মৃত দুই রোগীর লালা রস পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আশায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার রাতে ওই রিপোর্ট মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ থেকে বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে এসে পৌঁছায়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাঁকুড়া ১ নং ব্লকের মনোহর গ্রামের বাসিন্দা বাদল হাঁসদা রবিবার এই হাসপাতালে ভরতি হন। অন্যদিকে, পুরুলিয়ার সাতুড়ি থানার কিষান মান্ডি নামে আর এক ব্যক্তিকেও ওইদিনই আনা হয় হাসপাতালে। তাঁরা দুজনেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দিকাশি- সহ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাই দু’জনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করিয়ে শুরু চিকিৎসা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতদের কোনও বিদেশ যাত্রার রেকর্ড নেই। বিদেশ ফেরত কারও সংস্পর্শে তাঁরা এসেছিলেন, তেমনটাও নয়। তবে পুরুলিয়ার বছর আঠেরোর কিষাণ মান্ডি গত দু’মাস ধরে যক্ষ্মায় ভুগছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁদের। তবে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই পরিবারের ১০ জন সদস্যকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের তরফে। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়ায়।
এরপর মধ্যরাতে দুজনের মৃতদেহ বাঁকুড়া শহরের মাঝে লক্ষ্যাতোড়া শ্মশানে দাহ করা নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হয়। দাহকাজের সময় শ্মশানের কর্মী এবং গাড়ির চালকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বাঁকুড়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদের দাবি, নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই দুই রোগীর পরিবার মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করে। তাই জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁদের দাহ করা হয়েছে। তাঁর এই দাবি ঘিরেও সংশয় তৈরি হয়েছে অনেকের। তবে সোমবার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মানুষ। জেলার সুস্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন জানান, “ওই দুই রোগীর লালা রস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেই রিপোর্টে COVID-19 নেগেটিভ এসেছে।” বাঁকুড়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ জানিয়েছেন, “দু’জনের দেহ বাঁকুড়া পুরসভা পরিচালিত লক্ষাতোড়া শ্মশানে দাহ করা হয়েছে। মৃত দুই পরিবারের আত্মীয়দের কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছিল।” তবে এই রিপোর্টে কিছুটা স্বস্তি মিললেও জেলার বাসিন্দাদের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলার কারণে সমস্যা জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.