প্রতীকী ছবি।
অর্ণব দাস, বারাকপুর: মুখ্যমন্ত্রীতেই আস্থা! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাকপুর মহকুমায় স্কুলগুলিতে উপস্থিতির হার বাড়ল সুপ্রিম রায়ে কর্মহারা শিক্ষকদের। রুটিন মেনেই পালন করলেন নিজ নিজ দায়িত্ব।
জেলার মধ্যে এই তালিকায় শীর্ষে হালিশহরের হাজিনগর হিন্দি আদর্শ বিদ্যালয়। স্কুলের ৪৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ১৮ জন ‘চাকরিচ্যুত’। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার পর মঙ্গলবার এই স্কুলে উপস্থিত হয়েছেন ১৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা। স্কুলের টিচার ইন-চার্জ দেবেন্দ্রনাথ দুবে জানিয়েছেন,”১৬ জন আসায় স্কুল চালাতে সুবিধা হয়েছে।” এই তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে কাঁকিনাড়া হাই স্কুলও । সুপ্রিম রায় স্কুলের ৩৬জন শিক্ষকের মধ্যে চাকরি বাতিল হয়েছে ১২ জনের। এদিন তাঁদের মধ্যে ৯ জন স্কুলে উপস্থিত হয়েছিলেন। টিচার ইন চার্জ শ্যামবাবু রাজভর জানিয়েছেন, “এরা কাজে যোগ দেওয়ার অনেকটা স্বস্তি পেয়েছি, স্কুল চালাতে সুবিধা হয়েছে। যদি সকলেই আসত, আরও ভালো হত। মুখ্যমন্ত্রী এই কর্মহারাদের জন্য যেভাবে লড়াই করছেন আশাকরি কিছু একটা হবে।”
কিন্তু এদিন দেগঙ্গা থেকে অশোকনগর, মধ্যমগ্রামের অধিকাংশ স্কুলেই আসেননি সদ্য চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দেগঙ্গা চৌরাসী হাই স্কুলে পাঁচজন শিক্ষক এবং একজন শিক্ষাকর্মী চাকরিহারার তালিকায় রয়েছেন। পাঁচ জন্যই বিজ্ঞানের শিক্ষক। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের পরেও সংশয় কাটিয়ে পাঁচজন শিক্ষকের কেউই এদিন স্কুলে আসেননি। শিক্ষাকর্মী আমানুর হোসেন অবশ্য এদিন স্কুলে এসেছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহরিয়া আলম জানিয়েছেন, “একসঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগের টিচার চাকরিহারা হওয়ায় বিজ্ঞানের ক্লাস করানোটাই চ্যালেঞ্জের।”
অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন হাই স্কুলে সুপ্রিম রায়ে দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছে। একজন কম্পিউটারের শিক্ষক সৌকত সাহা। অন্যজন কেমিস্ট্রির রুম্পা খাতুন। আদালতের রায়ের দিনেও তাঁরা স্কুলে এসেছিলেন। কিন্তু সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও দু’জনের কেউ আসেননি। তবে,চাকরিহারা কম্পিউটার শিক্ষক এদিন ফোনে যোগাযোগ করে বুধবার স্কুলে আসবেন বলেই প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সদ্য চাকরিহারাদের বেতন নিয়ে আমি সংশয়ে আছি। বেতনের জন্য ১০তারিখের মধ্যেই শিক্ষা পোর্টালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম আমাকেই অপলোড করতে হয়। কিন্তু এখনও সেটা করিনি। কাউন্সিলের পক্ষ থেকে চাকরিহারাদের বেতন সংক্রান্ত কোন গাইডলাইনও আসেনি। ফলে ধোঁয়াশায় রয়েছি।” মধ্যমগ্রাম বয়েজ হাই স্কুলের চাকরিহারা হয়েছেন রসায়নের একজন শিক্ষক। তিনিও এদিন স্কুলে আসেননি।
প্রসঙ্গত, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে মমতা বলেছিলেন, “আপনাদের কারও কাছে ভিক্ষা করে খেতে হবে না। পড়াশোনা করুন। বাচ্চাদের মানুষ করুন। ভলান্টিয়ারি সার্ভিস দিন। আমরা চাই আইন আপনাদের সুরাহা করুন।” তাঁর এই আরজিতেই সাড়া দিলেন চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.