ইটানগরে গ্রেপ্তার দুই। নিজস্ব চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যজুড়ে জাল সিম কার্ড চক্রের বড় পর্দাফাঁস। তদন্তে নেমে কলকাতা ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ হানা দিয়েছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরে অভিযান চালিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন তদন্তকারীরা। এই চক্রের বিস্তার অনেক দূর। সেই কথাই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
গতকাল মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা হানা দিয়েছিল বেলেঘাটা ও বাগুইআটি এলাকায়। দুই থানার পুলিশও এই অপারেশনে ছিল। শুভম দেবনাথ, রিপন সাহা, অনির্বাণ সাহা ও দেবলীনা চক্রবর্তী নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রের পাণ্ডা দেবলীনা। এমনই অনুমান করছেন তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয়, অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ২৩৭ টি প্রিঅ্যাক্টিভেটেড সিম, আটটি মোবাইল। ধৃতদের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই জাল সিম কার্ড পাঠানো হয়েছে। সেই কথাও অনুমান করা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের তিন জেলাতেও পুলিশ জাল সিম কার্ড চক্রে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রাতে কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ হানা দিয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। ঘটনায় তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের নাম শুভঙ্কর সাহা, কৌশিক রায় ও প্রসেনজিত দে। ধৃতরা প্রত্যেকেই জাল সিম কার্ড বিক্রির সঙ্গে জড়িত। শুধু তাই নয়, জেলার আরও একাধিক থানাও এই ইস্যুতে তদন্ত শুরু করেছে। আরও একাধিক ব্যক্তি আগামী দিনে গ্রেপ্তার হবে। এমনই আশা করছে, কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা। গতকাল রাতে একাধিক পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
উত্তর দিনাজপুরেও জাল সিম কার্ড চক্রে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। ইসলামপুর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ গোপাল সরকার ও সারজিল হক নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। গোপালের বাড়ি দাড়িভিট এলাকায়। সারজিল হক কাশিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড বিক্রির দোকান রয়েছে। তাঁরা সাধারণ ক্রেতাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে সিম কার্ডের ডকুমেন্ট তৈরি করে প্রতারণা চালাতেন। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতা সাইবার ক্রাইম শাখা থেকে ২৯ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবারও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি জেলাতেও জাল সিম কার্ড চক্রের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে। ডুয়ার্সের মালবাজার থেকে এই চক্রে যুক্ত আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল। এই চক্রে এখন অবধি মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মালবাজারে একটি মোবাইল ফোনের দোকান সিল করে দিয়েছে পুলিশ। দোকান মালিকের খোঁজ চলছে। চক্রের মাথাদের ধরতে অন্য রাজ্যেও হানা দিতে পারেন বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে নদিয়ার একাধিক থানা এলাকাতেও জাল সিম কার্ড চক্রের তদন্তে পুলিশ হানা দিয়েছিল। কল্যাণী, হরিণঘাটা ও চাকদা থানা এলাকা থেকে সাত জন মোবাইলের সিম বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রানাঘাট জেলা পুলিশ আরও অভিযান চালাবে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটছে। জাল সিম কার্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ঘটনাও সামনে আসছে। সেইসব কিছুরই তদন্তে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে বলে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.