দেবব্রত দাস, খাতড়া: কংক্রিটের জলের ট্যাঙ্কে হালকা ফাটল দেখা গিয়েছিল। নজর পড়তেই ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল বিপত্তি। আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের জলের ট্যাঙ্ক। বুধবার দুপুর তিনটে নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল সারেঙ্গা ব্লকের গড়গড়িয়া পঞ্চায়েতের ফতেডাঙা এলাকায়। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে আস্ত একটি জলের ট্যাঙ্ক আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ায় এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও যেখানে জলের ট্যাঙ্কটি রয়েছে তার আশেপাশে কেউ না থাকায় বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। কেউ হতাহত হয়নি। তবে হঠাৎ কেন এই জলের ট্যাঙ্কটি এমনভাবে ভেঙে পড়ল তা খতিয়ে দেখছে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুপুর তিনটে নাগাদ আচমকা বিকট শব্দে জলের ট্যাঙ্কটি ভেঙে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে ট্যাঙ্কে মজুত অবশিষ্ট জল হু হু করে আশেপাশের জমিতে পড়ে যায়। আচমকা এমন ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। চারপাশের মানুষজন নিমেষের মধ্যে সেখানে ভিড় করেন। প্রত্যক্ষদর্শী বাবুলাল মুর্মু বলেন, “জল ট্যাঙ্কে থেকে কিছুটা দূরে গরু বেঁধেছিলাম। সেখানেই আমি দাঁড়িয়েছিলাম। আচমকা দেখি জলের ট্যাঙ্কটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে। তবে এদিন সকালেই ওই জলট্যাঙ্কিতে হালকা ফাটল দেখা যাচ্ছিল। জল চুঁইয়ে পড়ছিল। তারই মধ্যে আচমকা এটা ঘটে গেল। আমরা কিছু বুঝতে পারছি না।” এলাকার বাসিন্দা তথা সারেঙ্গা ব্লক তৃণমূল সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কীভাবে এত বড় একটা জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ল বুঝতে পারছি না। প্রশাসন বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নিক এটাই আমরা চাইছি।” সারেঙ্গার বিডিও সংলাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই জল ট্যাঙ্ক নির্মাণ ও জল সরবরাহের বিষয়টি দেখে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বাঁকুড়া ডিভিশনের জল সরবরাহ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুমন প্রামাণিক বলেন, “সারেঙ্গার ফতেডাঙা এলাকায় অবস্থিত ওই জলের ট্যাঙ্কটি ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়। ওই কাজের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাটির হাতেই জলের ট্যাঙ্কটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে। ৫ বছর জল ট্যাঙ্কে ফাটল ধরবে না বলেই জানিয়েছিল নির্মাণকারী সংস্থা। এখনও ওই জলের ট্যাঙ্কটি রক্ষণাবেক্ষণের ভার আমাদের হাতে তুলে দেয়নি। এদিন সকালে ওই জলের ট্যাঙ্কে চিড় দেখা দিয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থা ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই আচমকা সেটি ভেঙে পড়েছে। কী কারণে এই বিপত্তি তা খতিয়ে দেখা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নতুন করে ওই ঠিকাদার সংস্থা সেটি তৈরি করে দেবে। ওই ট্যাঙ্কে ৭ লক্ষ লিটার জল মজুত থাকত। গড়গড়িয়া ও বিক্রমপুর পঞ্চায়েতের ১২ টি গ্রামে জল সরবরাহ করা হয়। তবে জল মজুত না থাকলেও ওই এলাকায় জল সরবরাহে কোনও অসুবিধা হবে না। সরাসরি পাম্প থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হবে।”
দেখুন ভিডিও:
ছবি: পরেশ মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.