Advertisement
Advertisement
SJDA

শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির এসজেডিএ ‘করে কম্মে’ খাওয়ার জায়গা! দুর্নীতিবাজদের নজরে ‘সোনার হাঁস’

শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির উন্নয়ন তরান্বিত করতে ১৯৮০ সালে তৈরি হয় এসজেডিএ।

Massive corruption in SJDA, targetting many development schemes
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 29, 2024 6:26 pm
  • Updated:June 29, 2024 6:26 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির উন্নয়ন তরান্বিত করতে ১৯৮০ সালে তৈরি হয় এসজেডিএ। স্বপ্নভঙ্গ করে সেটাই এখন রীতিমতো ‘করেকম্মে’ খাওয়ার জায়গা। দুর্নীতিবাজদের নজরে ‘সোনার হাঁস’।

ওয়েস্ট বেঙ্গল টাউন অ্যান্ড কান্ট্রি (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) আইন অনুযায়ী এসজেডিএ তৈরি হয়। এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা দিয়েছে সংস্থাকে। কিন্তু উন্নয়নের কাজ কি সত্যি হয়েছে? একসময় এসজেডিএ-কে পুরোপুরি শিলিগুড়ির জন্য ব্যবহার করে গিয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য। জলপাইগুড়িকে দিয়েছেন ছিটেফোঁটা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিযোগ, ওই কারণে তাকে শিলিগুড়ির মন্ত্রী এবং এসজেডিএ-কে এসডিএ অর্থাৎ শিলিগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে পালটে দেওয়ার কারিগর বলা হয়। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ তেমন ছিল না। কিন্তু ২০১১ সালের পর ছবি পালটাতে শুরু করে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘শাহাদত’ মডিউলে ফের বাংলা যোগ, মঙ্গলকোটের রাজমিস্ত্রির গ্রেপ্তারিতে উঠছে বহু প্রশ্ন]

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরের রাস্তার ধারে ত্রিফলা বাতি লাগানো হয়। কয়েকদিনের মধ্যে সবই মাটিতে গড়াগড়ি খেতে বসে। এখন নিশ্চিহ্ন হয়েছে। ওই প্রকল্পে এসজেডিএ-র বিরুদ্ধে দুশো কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুই শহরের বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন কেন ওই বাতি বসানো হয়েছিল? কেন সাধারণ মানুষের অর্থের এমন অপচয়? কারণ, পথবাতি স্তম্ভের নিচেও ত্রিফলা বাতি লাগানো হয়েছিল। এতটাই খারাপ মানের ছিল যে কয়েকদিন না যেতে একে একে বিকল হয়ে সবই ত্রিভঙ্গ মুরারি হয়েছে! এখানেই শেষ নয়। কাওয়াখালিতে দুশো একর জমি এসজেডিএ-র মাধ্যমে প্রথমে হিডকো এবং পরে হাত বদল হয়ে বেসরকারি সংস্থার হাতে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। কেন উপনগরীর জমি হাতবদল হল? এখানেও কি ছিল মোটা টাকার লেনদেন! প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। দার্জিলিং জেলা সিপিএম সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, “জমি কেলেঙ্কারির মাথায় বসে আছে এসজেডিএ। সরকারি জমি মাফিয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছি।”

কার্যত শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণ থেকে উপনগরী বাদ নেই কিছু। নতুন সংযোজন মোটা টাকা তোলা আদায় করে বিহারের জমি মাফিয়াকে শপিং মল ও আবাসন তৈরির সুযোগ করে দেওয়া এবং হংকং মার্কেট ও বিধান মার্কেটে বহুতল তৈরির অনুমতি প্রদান। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে, এসজেডিএ যেন সোনার হাঁস! ডিম চুরিতে ব্যস্ত প্রত্যেকে। না হলে শিলিগুড়ি শহরের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় ক্যামেরা বসানোর কাজ থেকে টাকা গায়েব হয়! প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১-২০১২ সালে। সেখানে প্রায় দশ কোটি টাকার গরমিলের অভিযোগ পেয়ে ইডি তদন্তে নামে। অভিযোগ, নিরাপত্তার নজরদারিতে পিটিজেড ক্যামেরার পরিবর্তে বক্স ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল৷ এসজেডিএ-র বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থার ২৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে ইডি। প্রচুর পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়ে ওই সংস্থাকে কাজ শেষ হওয়ার আগেই বিপুল অঙ্কের বিল মেটানোর অভিযোগ ওঠে এসজেডিএ কর্তাদের বিরুদ্ধে।

[আরও পড়ুন: উচ্ছেদ নিয়ে ধুন্ধুমার নিউ মার্কেটে, পুলিশ-হকার সংঘর্ষে রাস্তা অবরোধ, বন্ধ বাজার]

২০১৩ সালে ছটি টেন্ডার ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে৷ ওই ঘটনায় প্রায় ৬০ কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজ পায় ইডি। বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, “এসজেডিএ-র দুর্নীতির শেষ কোথায় কেউ জানে না।” সম্প্রতি এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান পদ থেকে সৌরভ চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েলকে চেয়ারম্যান করেছে রাজ্য। সৌরভবাবু বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে অপসারিত চেয়ারম্যান কি দায় এড়াতে পারেন?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement