ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: ত্রাণ বিলি ঘিরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত কামারহাটি। বেধড়ক প্রহারে গুরুতর আহত এক যুবক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এলাকায় সোমবার রাতের অশান্তির রেশ রয়েছে আজও। ঘটনার প্রতিবাদে সকালে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের বাড়ি ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সেখানে গেলে, জনরোষের মুখে পড়ে। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। হিংসাত্মক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধের দিকে। কামারহাটি পুরসভার ২৯ নং ওয়ার্ড এলাকায় ত্রাণ বিলি করছিলেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। নিজেদের উদ্যোগেই তাঁরা এলাকার কয়েকজনের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। অভিযোগ, সেসময় স্থানীয় কাউন্সিলর রূপালি সরকার তাঁর দলবল নিয়ে চড়াও হন সেখানে। হুঁশিয়ারির সুরে প্রশ্ন করেন, এলাকায় কাউন্সিলর থাকতে কেন যুবকরা ত্রাণ বিলি করছেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা গড়ায় হাতাহাতিতে। কাউন্সিলরের নির্দেশে তাঁর অনুগামীরা সৌমেন দাস নামে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ ওই পরিবারের। সৌমেনের মা অনিতা দাসের অভিযোগ, “ছেলে ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নিয়েছিল। এতেই ওই কাউন্সিলর রেগে যান। রড, লাঠি, বাঁশ, ইট – হেন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে ওকে পেটানো হয়নি। কাউন্সিলর চুলের মুঠি ধরে মেরেছে।” অভিযোগ, সেসময় চলে বোমাবজিও।
এরপর রাতে সৌমেনকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁর পরিবারের সদস্যরা আরজি কর হাসপাতালে ভরতি করান। সেখানে মৃ্ত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সৌমেন। সেই অশান্তির রেশ রয়েছে আজও। এদিন সকালে স্থানীয় কাউন্সিলর রূপালি সরকারের বাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর চলে স্থানীয় তৃণমূলের পার্টি অফিসেও। খবর পেয়ে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। জনরোষ আছড়ে পড়ে তাঁদের দিকেও। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশকে ঘটনাস্থলে ছুটতে হয়। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা নিজে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এলাকা এখনও থমথমে।
লকডাউনে এলাকার বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে এমন এক অশান্তির ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তাঁরা। স্থানীয় যুবক সৌমেনের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন সকলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.