ছবি: প্রতীকী
শঙ্করকুমার রায়, রায়গঞ্জ: রাত বাড়লেই গ্রামে হানা দেন তেনারা। কখনও সাদা কাপড়ে ঢাকা কেউ যেন ঘুরে বেড়ায় গ্রামের পথে। কেউ আবার ছায়াও দেখেছে আনাচকানাচে। অনেকে আবার বাড়িতেও তেনাদের অস্তিত্ব টের পেয়েছেন। আর এই ভয়েই এখন কাঁটা হয়ে রয়েছে কালিয়াগঞ্জের মরুয়াডাঙ্গি এলাকা। ভূতের উপদ্রবে গ্রামের অধিকাংশ লোক এখন ঘর ছেড়ে পালাতে পারলে বাঁচে। কিন্তু বসতভিটে ছেড়ে কোথায় যাবে? তাই প্রায় বাধ্য হয়েই মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই এমন ঘটনা ঘটছে কালিয়াগঞ্জ থানার মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মরুয়াডাঙ্গি এলাকায়। গোটা গ্রামে ভূতের আতঙ্কে তটস্ত। কিছুদিন আগে ২ জন জ্বরে মারা যান। অসুস্থ হয়ে পড়েন একজন। যদিও ডাক্তারদের মতে বার্ধক্যজনিত কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু গ্রামের মানুষ সেসব মানতে নারাজ। তার উপর আবার একজন আত্মহত্যা করেছে মানসিক অবসাদে। গ্রামে যে অপদেবতা ভর করেছে, তখন থেকেই শুরু হয় কানাঘুষো।
এই সব কাণ্ড কারখানার মধ্যে আবার গ্রামের ৭ জন আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন তাঁরা। ফলে অপদেবতার গুজব আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ে। অপদেবতা যে গ্রামের উপর ভর করেছে, তা বলতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। মোড়ের মাথায়, চায়ের দোকানে শুরু হয় চর্চা। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে খবর। এরই মধ্যে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের তরফে ওই ৭ জনের চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়। জানা যায় হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা। যদিও ইতিমধ্যেই ৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু গ্রাম থেকে ভূতের ভয় এখনও যায়নি।
রাজ্যের বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে গ্রাম থেকে এই অন্ধবিশ্বাস দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান মঞ্চের রায়গঞ্জ মহকুমার সম্পাদক কাঞ্চিরাম রায় একথা বলেছেন। এও জানা গিয়েছে পুলিশের সাহায্য নিয়ে এলাকায় সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে। এলাকাবাসীকে তাঁরা বলছেন, ভূত বা অপদেবতা বলে সত্যি কিছু নেই। এসবই মানুষের অন্ধবিশ্বাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.