ধীমান রায়, কাটোয়া: ছিপছিপে চেহারা৷ চোখে মুখে সরলতা৷ পরনে সাধারণ পোশাক৷ গুরুগম্ভীর না হলেও মোটের উপর ঠিকঠাক স্বভাবের৷ কম কথার মানুষও বটে৷ পেশা, রাজমিস্ত্রি৷ আট ঘণ্টা গায়ে খেয়ে উপার্জন ৩৫০ টাকা৷ আপাত নিরীহ মানুষটিকে দেখে দুঁদে পুলিশ আধিকারিকদেরও খেতে হল ভিমড়ি৷ সাধারণ রাজমিস্ত্রির মনে এতটা অপরাধ! ভাবতেও পারছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷
এলাকার সকলে তাকে জানত রাজমিস্ত্রি বলে৷ কিন্তু সেটা ছিল নিছক পোশার পরিচয়৷ রাত হলেই ডেরায় বসে চলত চুরির পরিকল্পনা৷ তারপর নিজের গ্যাংটিকে কাজে লাগিয়ে চলত একের পর এক অপারেশন৷ আউশগ্রামে টোটো চুরির চক্রের পাঁচজনকে ধরতেই বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ৷ অভিযুক্ত পাঁচ জনকে জেরা করে পুলিশ এই চক্রের মূল পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ পুলিশ জানায় ধৃতের নাম সিরাজুল শেখ (৩৮)। বাড়ি আউশগ্রামের ভাতকুন্ডা গ্রামে৷ মঙ্গলবার রাতে গুসকরা শহরে একটি ভাড়াঘর থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ সিরাজুলকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে শুধু টোটো চুরিই নয়, এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনায় ওই চক্রটি যুক্ত। গুসকরা শহরে ডেরা বেঁধে রীতিমতো নেটওয়ার্ক সাজিয়েছিল সিরাজুল৷
[দুর্যোগ কাটিয়ে খুলল সেবকের রাস্তা, বড় ক্ষতির আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের]
গত দু’মাসে গুসকরা শহরে বেশ কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছিল। পাশাপাশি যাত্রী সেজে গুসকরা থেকে ভাড়া নিয়ে গিয়ে দুটি টোটো ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে সম্প্রতি। এরপর থেকেই পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে ওই চুরি ছিনতাইয়ের চক্রটিকে ধরতে৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে আউশগ্রামের গোবিন্দপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শেখ সরিফ (২৮) ও কায়েম মোল্লা (২৯) নামে মঙ্গলকোটের কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে কুতুবউদ্দিন মণ্ডল ওরফে পল্টু, রেজাউল শেখ ও হালিমা বিবি নামে আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে প্রথমজনের বাড়ি বর্ধমানের তালিতে৷ বাকি দু’জন গলসি থানার কুরমুন গ্রামের বাসিন্দা৷ কুরমুন গ্রাম থেকে পুলিশ পাঁচটি চোরাই টোটো উদ্ধার করেছিল৷ তারপর থেকে চক্রের বাকিদের সন্ধানে তল্লাসি চালাচ্ছিল আউশগ্রাম থানার পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.