শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক জানাজানি হওয়ায় চরম হেনস্তার শিকার গৃহবধূ ও তাঁর প্রেমিক৷ গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয় দুজনকেই। এরপর গ্রামের মোড়লদের সামনেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় ওই প্রেমিক যুগলকে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে।
বছর পাঁচেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের ধসাচাঁদপুরের বাসিন্দা দিবাকর পাঁজার সঙ্গে বিয়ে হয় অনন্যা পাঁজা নামে ওই মহিলার। বিয়ের পরই কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে চলে যান মহিলার স্বামী। অভিযোগ, এরপর থেকেই প্রতিবেশী কিংকর পাঁজার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে অনন্যার। স্থানীয় ও প্রতিবেশীদের চোখ এড়িয়ে প্রায়দিনই এলাকায় দেখা করতেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে ছেলেকে টিউশন পড়তে দিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যান ওই গৃহবধূ। অভিযোগ, সেই সময় আপত্তিকর অবস্থায় অনন্যা ও কিংকরকে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা।
এরপর ওই যুগলকে গাছে বেঁধে রেখে মারধর করে এলাকাবাসী। পরে তাঁদের কাছেই জানতে চাওয়া হয় সম্পর্কের পরিণতি নিয়ে কী ভাবছেন তাঁরা৷ তাঁদের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়রের সামনে ওই যুগলের বিয়ে দেন স্থানীয়রা। এরপর রাতে ওই দম্পতিকে নিয়ে স্থানীয় থানায় যান সিভিক ভলান্টিয়র। তবে পুলিশ ওই মাতব্বরদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ৷ পরিবর্তে ওই দম্পতিকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন কর্তব্যরত পুলিশেরা। এরপর সদ্য বিবাহিত স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে হাজির হন অনন্যা।
ততক্ষণে খবর পৌঁছে গিয়েছে ভিনরাজ্যে থাকা স্বামী দিবাকরের কাছেও। এরপর বুধবার সকালেই গ্রামে হাজির হন তিনি। স্ত্রীর দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে চড়াও হয়ে অনন্যাকে মারধর করেন দিবাকরবাবু। টেনে হিঁচড়ে স্ত্রীকে নিজের বাড়িতেও নিয়ে যান তিনি। তবে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে ফিরে পেতে মরিয়া কিংকর৷ দিবাকরের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগ তুলে গ্রামের মোড়লদের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু তাতে কোনও সুরাহা মেলেনি। এপ্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য মহুয়া বেরা বলেন, “আমি গোটা ঘটনাটি শুনেছি। তবে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়নি।” সিভিক ভলান্টিয়র দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘ওরা বিয়ে করতে চেয়েছিল। তাই বিয়ে দেওয়া হয়েছে। জোর করে কিছু করা হয়নি।’’ সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরকীয়া বৈধ। তা সত্বেও কেন আইন অমান্য করলেন স্থানীয়রা? কেনই বা পুলিশ কোনও ভূমিকা নিলেন না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.