Advertisement
Advertisement

‘অনিশ্চিত’ ভোটের ঠেলায় থমকে গ্রাম-বাংলার বিয়ের অনুষ্ঠান

মাথায় হাত পাত্র-পাত্রীর পরিবারের।

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 22, 2018 8:31 pm
  • Updated:October 31, 2018 2:04 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এবার ভোটের ঠেলায় থমকে যাচ্ছে বিয়েও! উচ্চ আদালতের নির্দেশে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জটিলতা কেটে গেলেও কমিশন এখনও নতুন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে না পারায় গ্রাম-বাংলার বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে প্রভাব ফেলেছে এই পঞ্চায়েত ভোট৷

চৈত্র মাসে বিয়ের লগ্ন থাকে না৷ ফাল্গুনের পর বৈশাখকেই বেছে নেওয়া হয় বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য৷ কারণ জ্যৈষ্ঠ মাসেও বিয়েবাড়ি হয় না৷ আর আষাঢ়কে গাঁগঞ্জের মানুষ বিয়ে বাড়ির জন্য খানিকটা এড়িয়েই যায়৷ কারণ বৃষ্টি-বাদলায় রাস্তাঘাট কাদা হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়৷ কিন্তু এবার ভোট সমস্যায় ফেলেছে বৈশাখের বিবাহ অনুষ্ঠানে৷

Advertisement

কারণ, রাজ্য সরকার ইঙ্গিত দিয়েছিল এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে জুন থেকে আগস্টের মধ্যে৷ কিন্তু, নির্বাচন কমিশন প্রায় হঠাৎ করেই গত ৩১ মার্চ তিন দফায় ১,৩,৫ মে ভোট ঘোষণা করে৷ ওই ঘোষণাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৯ এপ্রিল৷ নির্বাচন কমিশন একদিন বাড়িয়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও তা বাতিল করাতেই সমস্যা বাঁধে৷ বিরোধীদের অভিযোগে ভিত্তিতে আদালত স্থগিতাদেশ দেয়৷ বর্তমানে সেই জটিলতা কেটে গিয়েছে৷ কিন্তু কমিশন যে এখনও ভোটের নতুন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারেনি৷ শুধুমাত্র আদালতের নির্দেশে মনোনয়নের দিন বাড়িয়ে স্ক্রুটিনি ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮ এপ্রিল জানিয়েছে৷

নির্বাচনবিধি অনুযায়ী প্রত্যাহারের পর থেকে ২১ দিনের ফারাক থাকতে হবে৷ এদিকে এই বৈশাখের প্রথম দিকে বিয়ের লগ্ন ছিল ৫ ও ৬৷ এই তারিখে বিয়ে নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি৷ সমস্যা হয়েছে ১২, ১৩, ১৪, ১৫ বৈশাখের বিয়ের লগ্ন নিয়ে৷ কারণ ১ মে অর্থাৎ ১৭ বৈশাখ আগের ঘোষণা অনুযায়ী ভোট থাকায় নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে গ্রাম-বাংলার মানুষ বৈশাখের মাঝামাঝি সময় থাকা লগ্নগুলিতে বিয়ের অনুষ্ঠান রাখেনি৷ অধিকাংশ পাত্র–পাত্রীর পরিবারই ২৭, ২৮ বৈশাখের লগ্নতে বিয়ের দিন ধার্য করে৷ কিন্তু ওই লগ্নের দিনগুলিতেও সমস্যায় ফেলেছে এই পঞ্চায়েত ভোট৷ কারণ প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকে বিধি মোতাবেক ২১ দিন হিসাব করলে ওই লগ্নের কাছাকাছিতেই ভোট হবে৷ তাই পুরুলিয়ার আড়শার বামুনডিহা গ্রামের বাসিন্দা অঙ্কুর সর্দার বলেন, ‘‘আমার ছেলের বিয়ের দিন ভোটের আগের ঘোষণার কথাকে মাথায় রেখে ২৮ বৈশাখ ঠিক করেছিলাম৷ কিন্তু এবার শুনছি ওই লগ্নের সময়ই ভোট হবে৷ ফলে, গাড়ি পাওয়া যাবে না৷ চারদিকে ভোটের আবহ থাকবে৷ খুব সমস্যায় পড়তে হবে মনে হচ্ছে৷’’

এখন যে ওই লগ্ন থেকে সরে আসবে তাও উপায় নেই, ওই সময় বিয়ের দিন ঠিক করা একাধিক পরিবারের৷ কারণ কার্ড ছাপানো থেকে বিয়ের প্রস্তুতি- প্যান্ডেল, লাইট, ক্যাটারারকে বরাত দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আর যদি ওই তারিখ একান্তই বদলাতেই হয় তাহলে আষাঢ় মাস ছাড়া উপায় নেই৷ জয়পুরের বাসিন্দা শ্রীপতি মাহাতোর কথায়, ‘‘আগের ভোটের ঘোষণাকে মাথায় রেখে ২৭ বৈশাখ মেয়ের বিয়ে ঠিক করি৷ এখন শুনছি ওই সময়ই ভোট হবে৷ কি যে করব বুঝতে পারছি না৷’’ ২৮ বৈশাখ আড়ষার বামুনডিহা গ্রামেই এগারোটি বিয়ে রয়েছে৷ তাই ২৭ ও ২৮ বৈশাখের লগ্নকে ঘিরে এখন মাথায় হাত পাত্র-পাত্রীর পরিবারের৷

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement