জ্যোতি চক্রবর্তী ,বনগাঁ: মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গোটা স্কুল চত্বর দখল করে নিয়েছিল এক ব্যক্তি। স্কুলের মাঠজুড়ে তৈরি হয়েছিল বিশাল প্যান্ডেল। বুধবার সকাল থেকে সেখানেই শুরু হয় রান্নার কাজ। তার জেরেই বন্ধ হয়ে গেল স্কুলের পঠনপাঠন। ঘটনাটি ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগর বড়া কৃষ্ণনগর সহদেব শিশু শিক্ষা নিকেতনে।
বুধবার ওই এলাকার বাসিন্দা পীযূষকান্তি মণ্ডলের মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তবে সে কথা জানত না স্কুলের ছাত্রছাত্রী কিংবা তাদের বাবা-মায়েরা। তাই প্রতিদিনের মতো নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে চলে আসে তারা। কিন্তু শিক্ষিকারা স্কুল ছুটি দিয়ে দেন। বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল রান্নাও হয়নি। তাই খাবারও পায়নি পড়ুয়ারা। এদিন দুপুরে স্কুলে গিয়ে দেখা গেল স্কুলের মাঠজুড়ে প্যান্ডেল করা হয়েছে৷
জোরকদমে চলছে রান্নাবান্না। উনুন জ্বালিয়ে বড় বড় কড়াই চাপানো হয়েছে।
ক্লাসরুম ফাঁকা। দিদিমণিরাও স্কুল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
মেয়ের বাবা পীযূষ মণ্ডল বলেন, “বাড়িতে জায়গা নেই। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় মেম্বারের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে প্যান্ডেল করা হয়েছে।” মৌখিক অনুমতি নেওয়ার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা বীণা বিশ্বাস। তবে বিয়ের কারণে স্কুল ছুটির অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষিকা কল্যাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিয়ের জন্য নয়, বিডিও অফিসে যেতে হবে আমাদের। সে কারণেই কয়েকটি ক্লাস নিয়ে ছুটি দিয়ে দিয়েছি। ডিম খাওয়ানো হয়েছিল ছাত্র-ছাত্রীদের।” গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ইলা বিশ্বাস বলেন, “স্কুল বন্ধ করে বিয়ের প্যান্ডেল অনৈতিক কাজ হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
বিয়ে বাড়ির জন্য ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা লাটে ওঠায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। তাদের দাবি, বাড়িতে বিয়ের আয়োজনের জায়গা না থাকলে এলাকায় প্রচুর অনুষ্ঠান করার মতো বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। সেগুলি ভাড়া নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করা যেত। বিয়ের জন্য স্কুল বন্ধ মেনে নেওয়া যায় না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.