নিজস্ব চিত্র।
অর্ণব দাস, বারাসাত: সকালে তৃণমূলের ঘরে ঢুঁ মেরে দুপুরে ফিরলেন সিপিএমে। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে দল বদলের ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। সেই তালিকায় সবচেয়ে কম সময়ে দল বদলের নিরিখে কার্যত সেরার শিরোপা পেলেন উত্তর ২৪ পরগনার মরিচা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সফিকুল মণ্ডল (Safikul Mandal)। সকালে আমডাঙার তৃণমূল (TMC) বিধায়কের উপস্থিতিতে শাসকদলে যোগ দিয়ে দুপুরে ফের সিপিএমে ফিরলেন তিনি। ঘরে ফিরে সফিকুলের দাবি, তাঁকে ভুল বুঝিয়ে ব্ল্যাকমেল করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তৃণমূলে।
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শনিবার আমডাঙার (Amdanga) তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমানের (Rafiqur Rahaman) উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন মরিচা পঞ্চায়েতে সিপিএমের সদস্য সফিকুল মণ্ডল-সহ ৩০টি পরিবার। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “বাংলার মানুষ মমতামুখী ও তৃণমূলমুখী। রাজ্যজুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সিপিএমের (CPIM) সদস্যরা। আসন্ন নির্বাচনে ওই পঞ্চায়েতে ব্যাপক লিড পাব আমরা।” যদিও বেলা গড়াতেই বদলে যায় ছবিটা। দুপুরে সিপিএমের পতাকা হাতে দেখা যায় সফিকুলকে। তিনি জানান, “আমি সিপিএমে ছিলাম, সিপিএমেই আছি।” তাঁর দলবদলকে ‘ব্ল্যাকমেল’ বলে অভিযোগ করেন উত্তর ২৪ পরগনার সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান।
সংবাদমাধ্যমকে আহমেদ বলেন, “পঞ্চায়েতে জেতার পর সফিকুলকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন যাতে না হয় তার জন্য কখনও টাকা, তো কখনও প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “সফিকুলকে কালিমালিপ্ত করতে সকালে ওকে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের পার্টি অফিসে বিধায়কের পাশে বসিয়ে একটি ছবি ছেড়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের পতাকা-সহ ওই ছবি প্রকাশ করে তৃণমূল দাবি করে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। এই দাবি সর্বৈব মিথ্যা। আমি সফিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে জানায়, “ওকে ব্ল্যাকমেল করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ও সিপিএমেই আছে।”
প্রসঙ্গত, মরিচা গ্রামের পঞ্চায়েতে শাসকদল তৃণমূলের আসন সংখ্যা ১০, বিজেপি ও সিপিএমের যথাক্রমে ৭ ও ৬ এবং নির্দল ১। এই হিসেবে সিপিএম, বিজেপি জোট বেঁধে মরিচায় পঞ্চায়েত গঠন করে। সিপিএমের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগে ছলে-বলে মরিচা পঞ্চায়েতের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল যার জেরেই দল ভাঙাতে উঠে পড়ে লেগেছে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.