Advertisement
Advertisement

Breaking News

হাতির তাণ্ডব

শিকার উৎসবে দাঁতালের হামলা, অযোধ্যার শিমুলবেড়া জঙ্গলে প্রাণে বাঁচলেন ৪ জন

বিশালবপু গজরাজের তাণ্ডবে জখম আরও অনেকেই৷

Marauding elephant attacks hunters at Ayodhya mountain
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 18, 2019 12:02 pm
  • Updated:May 18, 2019 1:29 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শিকার উৎসবে গিয়ে সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন অন্তত ৪ জন গ্রামবাসী৷ শনিবার সকাল আটটা নাগাদ জঙ্গলে গিয়েছিলেন বাঘমুন্ডির চারজনের একটি দল৷ আচমকাই তাঁরা এক বিশাল দাঁতালের মুখে পড়ে যান৷ প্রাণ বাঁচাতে পাশের শাল গাছে উঠে যান দু’জন৷ বাকি দু’জন জঙ্গলের ঝোপের আড়ালে গা ঢাকা দেন৷ তবু গজরাজের তাণ্ডব থেকে রেহাই মিলল না৷ শাল গাছটির উপরেই আছড়ে পড়ে হাতির রোষ৷ গাছ উপড়ে, ডালপালা শুঁড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে৷ যে ডালে আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই দুই ব্যক্তি, সেই ডালটি কোনওক্রমে রক্ষা পেয়েছে তাণ্ডব থেকে৷ বিশালবপু গজরাজে আক্রমণ থেকে প্রাণে বাঁচলেও, হাত ভেঙে গিয়েছে দু’জনের৷ তাঁরা ভরতি স্থানীয় হাসপাতালে৷

[আরও পড়ুন : সূর্যের তেজের দোসর তীব্র আর্দ্রতা, আগামিকাল অস্বস্তি চরমে ওঠার পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের]

আজ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের আদিবাসী সম্প্রদায় মেতে উঠেছে তাঁদের ঐতিহ্যবাহী শিকার উৎসবে৷ এদিন সকাল থেকেই জঙ্গলমুখী হয়েছিলেন উৎসাহী জনগণ৷ ১ নং ব্লকের হীরাখাপ গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই নেপাল মাহাতো এবং গণেশচন্দ্র মাহাতো আরও দুই বন্ধু সুভাষ এবং নীলকমলকে নিয়ে ঢুকেছিলেন অযোধ্যা পাহাড়ের শিমুলবেড়া জঙ্গলে৷ আচমকাই একটি বুনো দাঁতালের মুখোমুখি পড়ে যায় ৪ জনের ওই দল৷ প্রাণ বাঁচাতে শাল গাছে উঠে পড়েন নেপাল এবং গণেশচন্দ্র৷ বাকি দু’জন ঝোপঝাড়ের আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে ফেলেন৷ আর একেবারে সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করেন মত্ত হাতির তাণ্ডব৷ নেপাল এবং গণেশচন্দ্রের কথায়, ‘হাতি এমনভাবে শালগাছে পদাঘাত করছিল যেন কোনও মানুষকেই মাটিতে ফেলে মারছে৷ আমরা যে বেঁচে ফিরেছি, এ তো দ্বিতীয় জীবন পাওয়া৷’ আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সুভাষ মাহাতো বলছেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছিল, হাতির তাণ্ডবে নেপালের মৃত্যু কেউ আটকাতে পারবে না৷ এত বড় হাতি আগে কখনও এই জঙ্গলে দেখিনি৷’

Advertisement

তবে বরাতজোরে গজপতির তাণ্ডব থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন এঁরা চারজনই৷ তবে নেপালের বাঁ হাত এবং গণেশচন্দ্রের ডান হাতটি ভেঙে গিয়েছে৷ আহত হয়েছেন সুভাষ ও নীলকমলও৷ তাঁদের প্রথমে অযোধ্যা পাহাড়ের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে নেপাল, গণেশচন্দ্রকে স্থানান্তরিত করা হয় দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে৷

[আরও পড়ুন : ফলের আগে সরগরম পুরুলিয়ার বেটিং বাজার, পছন্দের প্রার্থীকে নিয়ে লক্ষাধিক টাকার বাজি]

শিকার উৎসবে গিয়ে জঙ্গলে বিপদে পড়ার ঘটনা এখানেই শেষ নয়৷ এই হাতির হামলার আতঙ্কে কালাফুলিয়া-সহ অযোধ্যা পাহাড়ের একাধিক জঙ্গল থেকে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও অনেকে৷ শিকারের জন্য আদ্রার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ বাড়ুইয়ের সঙ্গে ছিল তলোয়ার জাতীয় একটি অস্ত্র৷ তিনি হাতির ভয়ে গাছে উঠে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু পরে গাছ থেকে নামতে গিয়ে নিজের অস্ত্রের কোপে নিজেই আহত হন৷ শিকারি দলের সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর গড়বেতার গোকুল মান্ডি৷ তিনি জানিয়েছেন, শিকার উৎসবে যোগ দিতে শুক্রবার রাতেই তাঁরা জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিলেন৷ হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে আচমকা ঘুম ভেঙে পালাতে গিয়ে জখম হয়েছেন৷ এনিয়ে পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও রামপ্রসাদ বদানা বলেন, ‘শিকারিদের বলেছিলাম ঘন জঙ্গলে না ঢুকতে৷ ওখানে হাতি আছে৷ শুধুমাত্র নিয়ম পালন করে উৎসবে মাতুন৷ কথা না শোনায় এই বিপত্তি৷’ এভাবেই আদিবাসীদের ঐতিহ্যের উৎসবের রেশ কেটে গেল দিনের শুরুতেই৷

ছবি: অমিত সিং দেও৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement