সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলমহলে ফের উসকে উঠল মাওবাদী আতঙ্ক। স্বাধীনতা দিবস (Independence Day) নয়, এই দিন ‘কালা দিবস’ পালনের ডাক দিয়ে মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার হল ঝাড়গ্রামে। পোস্টারগুলি লাল কালি দিয়ে হাতে লেখা। ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানা লাগোয়া বেলপাহাড়ির ভুলাভেদা অঞ্চলে এই ধরনের বেশ কয়েকটি পোস্টার উদ্ধার হওয়ায় আবারও আগের সেসব আতঙ্কের দিনের স্মৃতি ফিরছে এই এলাকায়।
এই পাহাড়, জঙ্গলঘেরা বেলপাহাড়িতেই নয়ের দশকের শুরুতে মাওবাদীদের উত্থান। তারপর থেকেই জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের (Maoist) সংগঠন মজবুত হয়েছিল। শনিবার বেলপাহাড়ির ভুলাভেদার যাত্রী প্রতীক্ষালয়, বাঁকশোল এলাকার লোকের বাড়ির দেওয়ালে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বোর্ডে মাওবাদীদের নামে অসংখ্য পোস্টার চোখে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। একসময় লাল কালি দিয়ে হাতে লেখা এই ধরনের পোস্টার জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধারের ঘটনা প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ছিল।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলে উন্নয়নের নিরিখে অনেক বদল এসেছে। প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। কমেছে মাওবাদীদের উপদ্রব। আতঙ্কের দিনগুলো ভুলে জঙ্গলমহলের জনজীবন এখন অনেক শান্তিপূর্ণ। কিন্তু তার মাঝেও প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবস, স্বাধীনতা দিবসের মতো সময়ে রাষ্ট্রশক্তির বিরোধিতা করে নানা কর্মসূচি নিতে পারে মাওবাদীরা, এই আশঙ্কা থাকেই। এবছর বেলপাহাড়ির বিভিন্ন জায়গায় এত পোস্টারেই বোঝা গেল, আশঙ্কা কিছু অমূলক নয়।
এদিন স্বাধীনতা দিবসের দিন ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ছিল আঁটসাঁট। তার মধ্যেও কীভাবে এতগুলো পোস্টার ভুলাভেদা, বাঁকশোল এলাকায় সাঁটিয়ে দিয়ে গেল মাওবাদীরা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে। কেউ আতঙ্ক তৈরি করার জন্য পোস্টার লাগাতে পারে।” অন্যদিকে, আজকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে এমন একটা চাঞ্চল্যকর ঘটনার পরও জেলা পুলিশ সুপারকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই।
ছবি: প্রতিম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.