সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: স্বাধীনতা দিবসে মাওবাদীদের (Maoist) নামে দেওয়া পোস্টার, টাকা চেয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের চিঠির পর বেলপাহাড়ির একটি পর্যটন স্থলে পর্যটকদের বন্দুক দেখিয়ে মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা সামনে এল। এও মাওবাদীদেরই কার্যকলাপ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বেলপাহাড়ির হদড়াতে রাস্তার কাজ বন্ধের দাবিতে পোস্টারও পড়েছে মাওবাদীদের নামে। ইতিমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় আতঙ্ক বাড়ল জঙ্গলমহলের পর্যটকদের মধ্যে।
পুলিশ এবং স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) সীমানা ঘেঁষা বেলপাহাড়ির শিমুলপাল অঞ্চলের ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামের কাছে পর্যটনস্থলে এদিন খড়্গপুর থেকে আসা পর্যটকদের বন্দুক দেখিয়েছে মোবাইল ছিনতাই করে জনা কয়েক দুষ্কৃতী। ঢাঙ্গিকুসুম পর্যটনস্থলটি অতি মনোরম জায়গা। পাহাড়ের উপর থেকে ঝর্ণা নেমে এমে এসেছে এখানে। এখানে বরাবর প্রচুর পর্যটকের আনাগোনা। পিকনিক করতে মানুষের সমাগম হয়। এমন এক জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পটে দিনেদুপুরে এই ধরনের ঘটনায় স্বভাবতই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। খড়্গপুর থেকে কয়েকজন এসেছিল। কী ঘটেছে, আমরা তদন্ত করে দেখছি।”
বেলপাহাড়ির শিমুলপাল অঞ্চলটি ‘পাথর শিল্পীদের গ্রাম’ বলে পরিচিত। একসময়ে এই এলাকা ছিল অত্যন্ত দুর্গম। যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল খুবই খারাপ।বর্তমানে ঝাঁ চকচকে রাস্তা।মাওবাদী আমলে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন সারা বছর পর্যটকের ঢল লেগে থাকে। ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামের যে ছিনতাইবাজরা এসেছিল, তারাও দলে ছ,সাত জন ছিল। তার মধ্যে তিনজন মহিলা। প্রত্যেকের হাতে বন্দুক ছিল।পর্যটক দলের সকলের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার পর দলটি ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যায়।
রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর জঙ্গলমহলের অনেক শীর্ষ স্থানীয় মাওবাদী মূল স্রোতে ফিরেছে। তবে এখনও জবা মাহাতো, মদন মাহাতোর মতো নেতারা অধরা। স্বাধীনতা দিবসে বেলপাহাড়ির ভুলাভেদায় পোস্টার সাঁটানোর ঘটনায় মদন মাহাতোর নাম উঠে এসেছিল। তারপর পচাপানি গ্রামে চারজনকে হুমকি চিঠি এবং তার একমাসের মধ্যে ওই গ্রামে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। এবার একইদিনে ঢাঙ্গিকুসুমে পর্যটকদের থেকে মোবাইল ছিনতাই ও বেলপাহাড়ির হদড়াতে রাস্তার কাজ বন্ধের দাবিতে পোস্টার – সব মিলিয়ে ফের জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
ছবি: প্রতিম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.