সম্যক খান, মেদিনীপুর: ফের জঙ্গলমহলে হুঙ্কার মাওবাদীদের। এবার ‘কমরেড’দের নিশানায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সদর ব্লকে দেখা গেল মাওবাদীদের হুমকি পোস্টার। সেখানে শাসক শিবিরের দুই নেতাকে স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে ছত্তিশগড়ে একের পর এক মাও হানা উদ্বেগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রের। তারই প্রভাবে কি জঙ্গলমহলে নতুন করে অক্সিজেন জোগাচ্ছে মাওবাদীদের? প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহলে।
[‘মঞ্চেই বলে আপনার জ্যাকেটটা খুলুন, দেখব’, বিস্ফোরক আরও এক গায়িকা]
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে মেদিনীপুর সদর ব্লকের মুরাকাটার জঙ্গলে রাস্তার ধরে বেশ কয়েকটি পোস্টার দেখা যায়। হাতে লেখা পোস্টারগুলির নিচে সিপিআই মাওবাদী লেখা রয়েছে। পোস্টারে তৃণমূল নেতাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। লেখা রয়েছে, ‘শুভেন্দু অধিকারীর মুন্ডু চাই।’ পাশাপাশি শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে চোর বলে উল্লেখ করে তাঁর শাস্তি চাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার খবর চাউর হতে পোস্টারগুলি খুলে ফেলে গুরগুরিপাল থানার পুলিশ। সন্দেহভাজন মাওবাদীদের খোঁজে এলাকায় শুরু হয়েছে তল্লাশি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবারই পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে গ্রেপ্তার হয় চার সন্দেহভাজন মাওবাদী। এর আগে আসানসোল থেকে সিআইডি-র জালে ধরা পড়ে বিহার পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাওবাদী টাইগার। সব মিলিয়ে মাওনেতা কিষেনজির মৃত্যুর পর জঙ্গলমহলে জমি হারায় মাওবাদীরা। এবার হারানো জমি উদ্ধার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি বলেই মনে করা হচ্ছে। আইএস, তালিবান ও আল-সাবাবের মতো জঙ্গি সংগঠনের পর বিশ্বের চতুর্থ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর উগ্রবাদী সংগঠন মাওবাদী৷ ভারতে প্রায় ৫৩ শতাংশ নাশকতার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে এই সংগঠনের৷ কয়েকদিন আগে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে মার্কিন স্টেট রিপোর্টে৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভারতে ৫৩ শতাংশ নাশকতার সঙ্গে মাওবাদীদের যোগ থাকলেও, ২০১৬-র তুলনায় ২০১৭-তে নাশকতার সংখ্যা কমেছে৷ ২০১৬-তে মাও অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে হামলা হয় ৩৩৮টি এবং ২০১৭-তে সেই সংখ্যা কমে হয় ২৯৫টি৷ হামলার সংখ্যা কমলেও হতাহতের পরিমাণ বেড়েছে৷ মৃতের সংখ্যা বে়ড়েছে ১৬ শতাংশ ও জখমের সংখ্যা বেড়েছে ৫০ শতাংশ৷ মাওবাদীদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে চারটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন৷ সবচেয়ে বেশি জঙ্গি হামলা চালিয়েছে আইএস, ৮৫৭টি৷ তারপর রয়েছে যথাক্রমে তালিবান ও আল-সাবাব৷ এই দুই সংগঠনের হামলার সংখ্যা যথাক্রমে ৭০৩ ও ৩৫৩টি৷
[জীবিকা খোয়ানো ৭০০ ধীবর পরিবারের পাশে দাঁড়াল জেলা মৎস্য দপ্তর]
ছবি: নিতাই রক্ষিত
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.