সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: সুদীপ চোংদার ওরফে কাঞ্চনের পর এবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন আরও এক জেলবন্দি মাও নেতা৷ হাওড়ায় জেলবন্দি হয়ে রয়েছেন মাওবাদী সংগঠনের রাজ্য নেতা অনুপ রায়৷ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি৷ নিজের উপযুক্ত চিকিৎসা এবং আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে অবিলম্বে বদলি করার দাবিতে জেলের মধ্যেই আমরণ অনশন শুরু করেছেন তিনি। মঙ্গলবার সেই অনশন ২৫ দিনে পড়ল। সূত্রের খবর, তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করেছে। এবং শীর্ষ মাও নেতাকে হাওড়া জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করে চিকিৎসা করাচ্ছে কারা দপ্তর। কিন্তু সেখানেও তিনি আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সূত্রের খবর।
[ইচ্ছেমতো বসতে দেওয়া হয়নি, মালদহে বিক্ষোভ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ]
এ বিষয়ে রাজ্যের শীর্ষ মাও নেতা অনুপ রায় জানান, “হাওড়া জেল বা হাসপাতালে আমাকে রাখলে হয় মরতে হবে, নয়তো পাগল হয়ে যেতে হবে। তাই আমাকে অবিলম্বে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের হাসপাতালে বদলি করে চিকিৎসা করানো হোক।” মাও নেতার এই দাবিপূরণের জন্য এদিন রাজ্যের কারা দপ্তরের ডিজি অরুণ গুপ্তাকে ফোন করেন এপিডিআর-এর রাজ্য সম্পাদক ধীরাজ সেনগুপ্ত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেই ফোনে সাড়া দেননি কারা দপ্তরের ডিজি।’’ পাশাপাশি সোমবার কারা দপ্তরের ডিআইজি বিপ্লব দাসকে এ বিষয়ে তথ্য জানানোর চেষ্টা করেন এপিডিআর-এর অন্যতম সংগঠক আলতাব হোসেন। তাতেও কোনও সাড়া না মেলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কারা দপ্তরের ডিজি অরুণ গুপ্তার দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও ডেপুটেশনের ডাক দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর।
[পড়ে রয়েছে মেটাল ডিটেক্টর, চেকিং ছাড়াই হলে ঢুকছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা]
খড়দহের বাসিন্দা অনুপ রায়। তিনি হলেন মাওবাদী সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য। ২০১৪-তে হুগলির ডানকুনি থেকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ-এর গোয়েন্দারা। আদালতের নির্দেশ মতো তাঁকে রাখা হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। এই জেলেই বন্দি ছিলেন আরও এক মাওবাদী নেতা সুদীপ চোংদার ওরফে কাঞ্চন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতাজনিত কারণে কাঞ্চনের মৃত্যুর পরের দিনই অনুপ রায়কে পাঠানো হয় হাওড়া জেলে। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন থেকেই তিনি নিজের চিকিৎসার দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জেল সূত্রে খবর।
[বাঘ সংরক্ষণের বার্তা দিতে বাইকে চেপে বিশ্বভ্রমণে বাঙালি দম্পতি]
এপিডিআর-এর অন্যতম সংগঠক আলতাব হোসেন জানান, “তাঁর একবার সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছিল। তখন উপযুক্ত চিকিৎসা করানো হয়নি। পাশাপাশি তাঁর ডান চোখে দৃষ্টি খুবই ক্ষীণ। রয়েছে স্পন্ডিলাইটিস ও সুগারও।” এই অবস্থায় এপিডিআর-এর একটি প্রতিনিধিদল দেখা করেন হাওড়া জেলের সুপারের সঙ্গে। তাঁদের মতে, ‘সুপার খুবই মানবিক হয়ে অনুপ রায়ের অনশন ভাঙার চেষ্টা চালান। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। এরপর সুপার নিজেরই উদ্যোগে ধৃত এই মাও নেতাকে হাওড়া জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.