স্টাফ রিপোর্টার: অধীর চৌধুরি ‘ক্রিমিনাল’-এর মতো আচরণ করছেন৷ তাঁকে ‘অযোগ্য’ তকমা দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে মুর্শিদাবাদের বিধায়কেরই নাম তুলে কৌশলী চাল মানসের৷ সেইসঙ্গে বিরোধী দলনেতা পদেও আবদুল মান্নানকে অপসারণের দাবি সবং-পুত্রর৷ ওই পদে ডেপুটি লিডার নেপাল মাহাতোকে আনার দাবি৷ চিঠি দিচ্ছেন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে৷
শুক্রবার তাঁকে সাসপেন্ডের সুপারিশ করেছে কংগ্রেসের পরিষদীয় দল৷ আর শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে অধীর-মান্নানের অপসারণ দাবি করলেন মানস ভুঁইয়া৷ উল্লেখযোগ্য হল, অধীর-মান্নানকে প্যাঁচে ফেলতে সভাপতি ও বিরোধী দলনেতা পদে এমন দু’জন নেতার নাম মানস করলেন, যাঁরা কংগ্রেসে থেকেই ইদানীংকালে ‘বে-সুরে’ গাইতে শুরু করেছেন৷ মানসের দাবি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হোক মইনুল হক কিংবা আবু হাসেম খান চৌধুরিকে (ডালুদা)৷ আর বিরোধী দলনেতা করা হোক নেপাল মাহাতোকে৷ এখানেই লক্ষণীয়, মানস ভুঁইয়াকে পিএসি চেয়ারম্যান পদে এক বছর রেখে দেওয়ার দাবি জানিয়ে দিনকয়েক আগেই রাহুল গান্ধীকে চিঠি দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হক৷ ওই চিঠিতে নেপাল মাহাতোরও স্বাক্ষর ছিল বলে জানা গিয়েছে৷ মানসের পাশে দাঁড়িয়ে মইনুল হক বলেন, “মানসবাবুকে এক বছর পিএসি চেয়ারম্যান করা হলে কোনও অসুবিধা ছিল না৷ কিন্তু অধীর চৌধুরি-আবদুল মান্নান গোটা বিষয়টিকে হাস্যকর জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন৷” দিন কয়েক আগে নেপাল মাহাতোও জানিয়েছেন, “পিএসির বিষয়টি আলোচনা করে অনেক আগেই মিটিয়ে নেওয়া যেত৷ সমস্যা হত না৷”
কেন অধীর-মান্নানের অপসারণের দাবি? মানস ভুঁইয়া বলেন, “অধীর চৌধুরির মুখে ক্রিমিনালদের ভাষা শোনা যাচ্ছে৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুপারি, কুনকি হাতির মতো শব্দ ব্যবহার করছেন, যা কংগ্রেস সংস্কৃতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়৷ তাই অধীরের অপসারণ দাবি করছি৷” একইসঙ্গে মানস উল্লেখ করেন, “কংগ্রেস রাজনীতি ভুলে গিয়ে আবদুল মান্নান এখন চোখে হারাচ্ছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে৷ রাজ্য কংগ্রেস আলিমুদ্দিনের শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে৷ পরিষদীয় দলকেও বামেদের শাখায় পরিণত করা হচ্ছে৷ তাই এই বিরোধী দলনেতার দরকার নেই৷” রাজ্য কংগ্রেসের বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়ে এবং অধীর-মান্নানের অপসারণ চেয়ে সোনিয়া-রাহুলকে চিঠি দিচ্ছেন মানস৷ তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেস আইসক্রিমের মতো গলে যাচ্ছে৷ ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বাংলা থেকে কংগ্রেস কর্পূরের মতো উবে যাবে৷ এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিটাই তুলে ধরতে চাই সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর কাছে৷” দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন৷ তাই শাস্তি অপেক্ষা করছে ধরে নিয়েই মানস বলেন, “আমি ভীত নই৷ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, আমার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা দেখার জন্য৷” রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, মানস বনাম অধীর-মান্নানের লড়াই এখন চায়ের কাপের তলানিতে এসে ঠেকেছে৷ শুধু কাপটা ধোয়া বাকি রয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.