স্টাফ রিপোর্টার: কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বৃত্তটা সম্পূর্ণ করে ফেললেন মানস ভুঁইয়া৷ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানিয়ে দিলেন, অধীর-মান্নানের কাছ থেকে তিনি যে অসম্মান পেয়েছেন তাতে এই দলটা আর করা যাবে কিনা তা ভাবতে শুরু করেছেন৷ শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কোনওরকম সাক্ষাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিলেন সবংপুত্র৷ একইসঙ্গে ফের তিনি বললেন দেশের শ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুর নিয়ে যে কথা দিয়েছিলেন তা তিনি রেখেছেন৷
তাঁর এই দল বিরোধী বক্তব্য ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা কংগ্রেস ছাড়ার শেষ বার্তাই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল৷ সম্ভবত সোমবারই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন মানসবাবু৷ তাঁর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের চারজন সাধারণ সম্পাদক, জেলা সভাপতি-সহ একাধিক নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন৷ এই তালিকায় কনক দেবনাথ, অজয় ঘোষ, খালিদ ইবাদুল্লা, তাপস মজুমদার, মনোজ পাণ্ডে, মানব মিত্রর মতো নেতারা রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷
অধীর চৌধুরি ও আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে একাধিকবার মুখও খুলেছেন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক৷ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যে ভাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা দল চালাচ্ছেন, তাতে তাঁর কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে৷ বামপন্থীদের হাত ধরা অধীর-মান্নান দলকে কার্যত ‘শেষ’ করে ফেলেছেন, এমন বক্তব্যও শোনা গিয়েছে মানসের মুখে৷ আর এবার সরাসরি দল ছাড়ার কথা কার্যত স্বীকার করলেন মানস৷ তিনি ২০১৬ সালকে কংগ্রেসের কলঙ্কিত অধ্যায় বলেও চিহ্নিত করেছেন৷
মানস ভুঁইয়া কংগ্রেসের সাতবারের বিধায়ক৷ দায়িত্ব সামলেছেন পরিষদীয় দলনেতা থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবেও৷ তিনিই এবার অধীর-মান্নানের তাঁকে যোগ্য সম্মান না দেওয়ার তত্ত্ব সামনে এনে দল ছাড়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন৷ শুধু অধীর-মান্নান নয়, একেবারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুললেন মানসবাবু৷ যা আগে কখনও করেননি৷ কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ভূমিকাকেও মানসের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল৷ এই রাজ্যের কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক সি পি যোশী৷ তাঁকে সরাসরি আক্রমণ করে এআইসিসি-র সবথেকে খারাপ সাধারণ সম্পাদক বলেন মানস৷ সি পি যোশী সোনিয়াগান্ধী-রাহুল গান্ধীকে ভুল রিপোর্ট দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুইঁয়ার৷ রাজ্যে আসছেন সি পি যোশী কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনওভাবেই দেখা করবেন না মানস তা জানিয়ে দিয়েছেন৷
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিঙ্গুর উৎসব হয়েছে৷ সেই প্রসঙ্গেই তিনি মমতার ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ তিনি ফের এই দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে চিহ্নিত করেন ও দলমত নির্বিশেষে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন৷ চলতি মাসেই মানস দল ছাড়তে পারেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর৷ এর মধ্যেই আগামী ২৩ তারিখ আগরতলায় সভা করার কথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ তার আগেই মানস কংগ্রেস ছাড়তে পারেন বলে খবর৷ সেখানে দু’জনের সাক্ষাৎ হতে পারে বলে জানা গিয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.