স্টাফ রিপোর্টার: কংগ্রেসের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের প্রতীকে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন মানস ভুঁইয়া৷ তার আগে নামছেন তৃণমূলের হয়ে প্রচারে৷ মঙ্গলবার মানসবাবু নিজে এ খবর জানিয়ে বলেছেন, “আমি এখন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী৷ আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দল যে নির্দেশ দেবে তা পালন করব৷ আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের সভায় ত্রিপুরায় যাচ্ছি৷ এর পর ২৬ তারিখে আমার বিধানসভা কেন্দ্র সবংয়ে একাধিক কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকব৷” সূত্রের খবর, মানসের দলত্যাগ নিয়ে কংগ্রেস স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছে৷ মানসবাবুকেও চিঠি পাঠানো হচ্ছে৷ কিন্তু এই সুযোগ কংগ্রেসকে না দিয়েই মানস তৃণমূলের প্রতীকে সবং থেকে জিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে তাঁর৷ তবে কবে ইস্তফা দিচ্ছেন সে বিষয়ে কোনও কথাই বলতে চাননি তিনি৷ তাঁর বক্তব্য, “যা বলার দল বলবে৷” মানসের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মানসের বিধায়ক পদের বিষয়টি বিধানসভার অধ্যক্ষ বিচার করবেন৷” একইসঙ্গে তিনি জানান, কংগ্রেসের গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়েছে৷ এখন জগাই-মাধাই যদি ভুল স্বীকার করেন, তাঁদের পাশেও থাকবেন৷
সোমবার কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়া৷ মঙ্গলবার তিনি বিধানসভায় আসেন৷ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে নির্ধারিত ঘরে তিনি বসেছিলেন৷ এখন থেকে সেখানেই তিনি বসবেন৷ আগামী কর্মসূচি নিয়ে একাধিক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন৷ ইতিমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অজিত মাইতির সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর৷ মানসবাবু বলেন, “অজিতবাবুকেও বলেছি, জেলার দলের যে কোনও বৈঠকে আমাকে ডাকবেন৷ বিধায়কদের নিয়ে কোনও বৈঠক হলেও ডাকবেন৷ আমি অবশ্যই যাব৷ যা কাজ দেবেন, তা করব৷ জেলায় দলের জন্য কাজ করব৷” তিনি জানান, দলের তরফ থেকে খড়গপুর দেখতে বলা হয়েছে তাঁকে৷ দিনকয়েকের মধ্যে খড়গপুর গিয়ে সেখানকার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার কাজ শুরু করে দেবেন৷ মানস দেখা করতে চান বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জ্ঞান সিং সোহনপালের সঙ্গে৷
বস্তুত, মানস ভুঁইয়া, মহম্মদ সোহরাবের পর আগামিদিনে কংগ্রেসের একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলেই খবর৷ তালিকায় রয়েছেন বিধায়ক থেকে পুরপ্রধান৷ এ প্রসঙ্গে মানসই বলেছেন, “উন্নয়নের স্বার্থে সিরিজ অফ জয়েনিং হবে৷” অন্যদিকে এদিনই বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন মানসবাবুকে৷ তিনি বলেন, “কুলাঙ্গার, বিশ্বাসঘাতক মানসবাবুকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তৃণমূলে যোগদানের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, রাজনীতির জারজ সন্তান না হয়ে থাকলে, তিনি সে সম্পর্কে জানান৷ তৃণমূলে যোগদান অস্বীকার করা হলে, তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷” কিছুদিন আগেই দল ছেড়েছেন বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য৷ তাঁর সদস্যপদ খারিজের দাবিতে স্পিকারকে চিঠি পাঠাচ্ছে কংগ্রেস৷ কংগ্রেসত্যাগী বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরিকেও চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ দলত্যাগ আইনে সংশোধন চেয়ে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান৷ তাঁর বক্তব্য, “যে জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের জনমতের সঙ্গে প্রতারণা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করব৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.