ছবি: শান্তনু দাস।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া মাটির চালা। সেই ঘরেই যেন নেমে এল আকাশের চাঁদ। মুছে গেল সমস্ত দারিদ্র। কোন জাদুবলে এমনটা সম্ভব হল? স্রেফ ভাগ্যের চাকা ঘুরে। অবাক হচ্ছেন তো? কিন্তু এটাই খাঁটি সত্যি। ৩০ টাকা দিয়ে কেনা লটারির টিকিটে বীরভূমের (Birbhum) দুবরাজপুরের ফেরিওয়ালার ঘরে এল কোটি টাকার পুরস্কার। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাড়ার শেখ এহসানের ঘরে ভিড় জমতে শুরু করেছে। এহসান নিজেও অবাক। বিশ্বাসই হচ্ছে না যে তিনি এখন কোটি টাকার মালিক।
মাটির বাড়িতে বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস শেখ এহসানের। বছর তিরিশের যুবক বাবাকে অনুসরণ করেই প্লাস্টিকের সরঞ্জাম নিয়ে পাশের পাণ্ডবেশ্বরে ফেরি করেন। যা আয় হয়, তার মধ্যে থেকে লটারির (Lottery) টিকিট কেনার টাকাটা বাঁচিয়ে রাখতেন রোজ। এহসানের কথায়, ”প্রতিদিন ফেরি করে দু’শো টাকা আয় হয়। যার মধ্যে থেকে নিয়ম করে ৬০ টাকার লটারির টিকিট কাটতাম। এদিন বাজার তেমন ভাল ছিল না। পকেটে ৩০ টাকা ছিল। তাই দিয়েই একটা টিকিট কাটলাম। দুপুর একটা নাগাদ খেলা হতেই আমার কপাল খুলে গেল।”
দুবরাজপুরের (Dubrajpur) ইসলামপুরে চালা ঘর, মাটির দেওয়াল। তার উপর আবার পুরসভার দেওয়া ত্রিপল দিয়ে আচ্ছাদন করে মাথা গোঁজার ঠাঁই। পরিবারের কর্তা এখন এক কোটি টাকার মালিক। এ কী কম কথা! ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ নয়, কোটি টাকার স্বপ্নই যেন বাস্তবায়িত হয়ে গেল। ত্রিপলের চালা ঘরে দারিদ্র্যের অন্ধকার ঘুচে ঝলমল করে উঠল আলো। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ইসলামপুরের মাটির বাড়িতে এলাকার মানুষের ভিড়।
কী করবেন কোটি টাকা দিয়ে? প্রাথমিক বিস্ময় সামলে সেসব পরিকল্পনাও ছকে ফেলেছেন এহসান। জানাচ্ছেন, ”এক কোটি টাকায় আগে একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করব। ছেলেমেয়ের পড়ার জন্য টাকা জমিয়ে রাখব।” এহসানের বাবা শেখ জাফর আলি বলেন, “আমি নিজে ফেরি করি। ছেলেও সেই পথে গিয়েছে।” তবে তিনি জানান, ”টাকা পেলেও আমরা আমাদের পেশা ছাড়ব না। যে টাকা দিয়েছে সেই টাকা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য।” এহসানের প্রতিবেশীরা বলছেন, ”সংসার চালাতে প্রতিদিন এহসান ফেরি করতেন। লড়াই করেছেন অনেক। তবে তাঁর দিকে এবার তাকিয়েছেন ভগবান। কোটি টাকার লটারি জয় করেছেন তিনি।” এহসানের এই লটারি জয়ে উচ্ছ্বসিত সকলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.