ছবি: প্রতীকী
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে ছেলের গোটা পরিবারকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার খানা জংশনের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে৷ অভিযোগ, চার লক্ষ টাকা দিতে না চাওয়ায় ছেলে বউমা ও দুই নাতনিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে প্রাক্তন রেলকর্মী ইউসুফ। ঘটনায় গুরুতর জখম হন ছেলে শেখ ইকবাল, তাঁর স্ত্রী তুহিনা বেগম এবং তাঁদের দুই সন্তান সোহানা ও বিলকিস। তাঁদের চারজনকেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ইকবালের। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ইউসুফ পলাতক। বিকেলের দিকে গুসকরা স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন জমি ও সম্পত্তি নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে বিবাদ চলছিল। মঙ্গলবার রাতে ছেলে ইকবালকে চার লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল ইউসুফের। ইকবাল কলকাতায় কাজ করেন। তিনি গতকাল বিকেলে বাড়ি ফেরেন। টাকা দেওয়া ঠেকাতে ইউসুফ সকলকেই পুড়িয়ে মারার ছক কষে বলে অভিযোগ। ছেলের পাশের বাড়িতে থাকে ইউসুফ। ছেলে ফিরেছে দেখেই ছোট গ্যাস সিলিন্ডার কিনে আনে সে। এরপর রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে শুরু হয় ইউসুফের অপারেশন।
সেদিন রাতে খাওয়াদাওয়ার পর নিজের ঘরে ঘুমোতে যান ছেলে শেখ ইকবাল, তার স্ত্রী তুহিনা বেগম এবং তাদের দুই সন্তান সোহানা ও বিলকিস। অভিযোগ, রাত বাড়ার পর বাবা শেখ ইউসুফ ঘরের বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে দেয়। এরপর ঘরে মধ্যে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে শেখ ইউসুফের বিরুদ্ধে অভিযোগ। বন্ধ ঘর থেকে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বেরনোর চেষ্টা করেন ইকবাল। তাঁর ডাকাডাকিতে ভাই এসে তালা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করেন। কিন্তু ততক্ষণে শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঝলসে গিয়েছে চারজনের।
ইকবালের পরিবারকে উদ্ধার করার পর প্রতিবেশীরাই তাঁদের চারজনকেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করে। চিকিৎসকরা জানান, চারজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। বাবা শেখ ইউসুফের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। ইকবালের শ্বশুরবাড়ির তরফেও ইউসুফকের দিকেই উঠেছে অভিযোগের আঙুল। যদিও ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিকেলের দিকে তাকে গুসকরা স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রামেরই এক বাসিন্দা অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তখনই ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্য দিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টায় বাবাকে মদত করার অভিযোগ উঠেছে বড়ছেলে শেখ একরামের বিরুদ্ধে। তাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.