প্রতীকী ছবি।
শংকর কুমার রায়, রায়গঞ্জ: প্রথমে নিজের জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করলেন৷ এরপর বাড়িতে এসে ঘরের মধ্যেই কবর খুঁড়লেন৷ তারপর স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে খুনের চেষ্টা করলেন৷ বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের মিলনপাড়া এলাকা থেকে এমনই এক গুণধর স্বামীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ ধৃতের নাম নরেশ মোদক। এক আত্মীয়ের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন নির্যাতিতা জ্যোৎস্না মোদক৷ কিন্তু এখনও আতঙ্কে রয়েছেন তিনি৷
[সৎ মায়ের ‘মারে’ মৃত কিশোর, পুলিশের জালে অভিযুক্ত]
জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি পেশায় কাঠের মিস্ত্রি এবং তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না মোদক পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁদের দুই ছেলে রায়গঞ্জ সুদর্শনপুর দ্বারিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যাচক্রের পড়ুয়া। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীর শ্রাদ্ধ সেরে, মাথা কামিয়ে মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফেরে বছর পয়ত্রিশের নরেশ। তখন ঘরে কেবলমাত্র দুই ছেলেই ছিল। এরপর তাঁরা খেলতে চলে গেলে মদ্যপ অবস্থায় হঠাৎই ঘরের মেঝেতে কবর খুঁড়তে শুরু করে সে৷ তখন বাড়িতে ছিলেন না তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না দেবী। সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফিরতেই তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত৷ এমন সময় সেখানে এসে উপস্থিত হন জ্যোৎস্না দেবীর আত্মীয় পুষ্প ঘোষ৷ তিনিই কোনওক্রমে রক্ষা করেন জ্যোৎস্না দেবীকে৷
[যুবতীকে অপহরণের ঘটনায় ধৃত প্রতিবেশী, পলাতক অভিযুক্ত বাংলাদেশি যুবক]
এরপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে৷ ঘটনাস্থলে আসেন রায়গঞ্জ মহিলা থানার পুলিশ কর্মীরা এবং গ্রেপ্তার করেন অভিযুক্তকে৷ স্বামীর এহেন কীর্তিতে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন জ্যোৎস্না দেবী। তাঁর অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকে প্রায়দিনই মদ খেয়ে আমাকে মারধর করত নরেশ। মার খেতে খেতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। কিন্তু এমন একটা কাণ্ড ঘটাবে তা বুঝতে পারিনি।” মায়ের উপর বাবার রোজকার অত্যাচার এবং বৃহস্পতিবারের ঘটনা এখনও ভুলতে পারছে না জ্যোৎস্না দেবীর দুই সন্তানও৷ এখনও আতঙ্ক গ্রাস করে রয়েছে গোটা পরিবারকে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় নিজের দোষ স্বীকার করেছে অভিযুক্ত এবং স্ত্রীর শ্রাদ্ধের কথাও জানিয়েছে সে৷ ধৃতকে শুক্রবারই রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.