সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটে লাথি মেরে গর্ভস্থ ভ্রুণ নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার জয়পুর থানার খালনা দক্ষিণ পাড়া এলাকায়। নির্যাতিতা মহিলার নাম রূপসোনা বেগম। ঘটনায় ইতিমধ্যে ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, পণের দাবিতেই ওই গৃহবধূর পেটে লাথি মেরে ভ্রুণ নষ্ট করা হয়েছে।
[উপহার নয়, আনুন লেখার খাতা! বিয়েতে অভিনব আমন্ত্রণ ]
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গৃহবধূর স্বামী রহিম খাঁ, শাশুড়ি রাবিয়া বেগম, ননদ মহসিনা খাতুন-সহ দুই আত্মীয় ফিরোজা বেগম ও তার স্বামী শেখ মুস্তাকিন খাঁয়ের বিরুদ্ধে জয়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গৃহবধূর বাবা কালো খাঁ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুর থানার পুলিশ ফিরোজা বেগম ও মুস্তাকিন খাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ (এ), ৩২৬, ৩০৭, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আট মাস আগে জয়পুরের খালনা দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা রূপসোনা বেগম (খাতুন)-এর সঙ্গে খালনার বাসিন্দা পেশায় পাথরের মিস্ত্রী রহিম খাঁয়ের বিয়ে হয়। নির্যাতিতার বাড়ির লোকেদের বক্তব্য, বিয়ের সময় পাত্রপক্ষের দাবি মতো ৩ ভরি সোনার গয়না ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছাড়াও নগদ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক হিসাবে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই রূপসোনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আরও ২০ হাজার টাকার জন্য তাঁকে দিতে থাকে। শ্বশুরবাড়ির দাবি মতো রূপসোনা তাঁর বাবার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা আনতে পারলেও, বাকি টাকা জোগাড় করতে পারেনি।
[অমানবিক! বাবাকে দু’মাস শিকলে বেঁধে রাখল ছেলে]
রূপসোনার পরিবারের দাবি, সেই কারণে তাঁর উপর অত্যাচার চালাতে থাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। রুপসোনার বাড়ির লোকেদের আরও অভিযোগ, গত ১১ জানুয়ারি রাত ১০টা নাগাদ টাকার দাবিতে ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে মারধর শুরু করে। সেই সময় তার স্বামী রহিম খাঁ গৃহবধূর পেটে লাথি মারে। ঘটনার কথা জানতে পেরে গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে জয়পুরের বিভূতিভূষণ ধর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো নির্যাতিতাকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই গৃহবধূ মৃত ভ্রুণ প্রসব করে। এদিন মৃত শিশু প্রসব করার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই গৃহবধূ। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.