ধীমান রায়, কাটোয়া: বউদির সহযোগিতায় ঝাড়ফুক (Excorcism) করেছে গ্রামেরই এক মহিলা। যার জেরে প্রায় এক বছর ধরে শয্যাশায়ী পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman district) জেলার ভাতারের কুলচণ্ডা গ্রামের এক আদিবাসী যুবক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা এলাকায়। রবিবার প্রশাসনের তৎপরতায় ওই যুবককে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। ভাতারের বিডিও অরুন কুমার বিশ্বাস জানান, সচেতনার প্রচার করা হচ্ছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলচণ্ডা গ্রামের রেলপথের ধারে বেশকিছু আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ বসবাস করেন। ওই পাড়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের পরমে সোরেন। পেশায় দিনমজুর। স্ত্রী ও তিনটি সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। পরমের তিন ভাই আলাদা থাকেন। পরমের দাদা সুনীল সোরেন বলেন, “আমার ভাই প্রায় একবছর ধরে অসুস্থ। অনেক চিকিৎসা করানো হয়েছে। ওঝা গুনিনদের কাছে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সুস্থ হয়নি। এই অবস্থায় পাড়ারই এক মহিলা নিজেই স্বীকার করে সে ঝাড়ফুঁক করার কারণে পরমে অসুস্থ হয়েছে। ওই মহিলাই জানায় সে আবার ঝাড়ফুঁক করে সুস্থ করে দিতে পারবে।”
যে মহিলাকে সন্দেহ করা হত শনিবার সন্ধায় তাকে চেপে ধরেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি পরমের এক বউদিও ঝাড়ফুঁকে জড়িত সন্দেহে তাকে ধরা হয়। এনিয়ে চাঞ্চল্য ছড়াতেই পুলিশের কাছে খবর যায়। পুলিশ দুই মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। যদিও পাড়ার মোড়ল মঙ্গল টুডু বলেন, “অসুস্থ যুবক আমার ভাগ্নে হয়। দীর্ঘদিন অসুস্থ। আমরা কাউকে জোর করিনি। ওই দুই মহিলা নিজে থেকে স্বীকার করেছে তারাই পরমেকে অসুস্থ করেছে। আবার ওরাই সুস্থ করে দিতে পারবে। আমি চাই ছেলেটা সুস্থ হয়ে উঠুক।”
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভাতারের বিডিও ও ওসি সৈকত মণ্ডলের তৎপরতায় পরমে সোরেনকে ভাতার হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পাশাপাশি ওই ঘটনা ঘিরে কুলচণ্ডা আদিবাসীপাড়ায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে এই আশঙ্কায় এদিন দুপুরে ওই পাড়ায় সচেতনতামূলক প্রচার করতে বৈঠক ডাকা হয়। ছিলেন বিডিও, ওসি, ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধক্ষ্য মহেন্দ্র হাজরা সহ আদিবাসী সংগঠনের কয়েকজন নেতৃত্ব। তারা স্থানীয়দের বোঝানোর চেষ্টা করেন। বিডিও জানান অসুস্থ যুবকটির যথাযথ চিকিৎসা চলছে। তার শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.