কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: তাঁর মোবাইলের রিংটোন ছিল অধীর চৌধুরির ভাষণ। মানিব্যাগে থাকত সেই নেতারই ছবি। মিছিল-মিটিংয়ে আদৌ যেতেন না, কিন্তু তাতে কি, নেতার প্রতি অগাধ ভালবাসা ছিল তাঁর। প্রিয় নেতা অধীর চৌধুরির সঙ্গে যেন এক অমোঘ টানেই জড়িয়ে রেখেছিলেন নিজেকে। ঋণের দায়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মুহূর্তেও সেই টানই থেকে গেল অটুট। সুইসাইড নোটেও প্রিয় নেতার প্রতি ভালবাসার কথা বলতে ভুললেন না মুর্শিদাবাদের সুরজিৎ।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ বিশ্বাস। বছর ৩৩-এর ওই যুবক বহরমপুর অযোধ্যানগর এলাকায় নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। নজরে পড়তেই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধারের সময় মেলে সুইসাইড নোট। আর তা দেখেই চমকে ওঠেন সকলে। জানা গিয়েছে, সুইসাইড নোটে একটাই আক্ষেপ করেছেন তিনি। লিখেছিলেন, “সাংসদ হিসাবে অধীর চৌধুরির ডবল হ্যাটট্রিক আর দেখা হল না।” কংগ্রেসের টিকিটে টানা পাঁচবার লোকসভা নির্বাচনে জিতেছেন অধীর চৌধুরি। আর একবার জিতলেই তাঁর জয়ের ডবল হ্যাটট্রিক হওয়ার কথা। প্রিয় নেতার সেই কৃতিত্বের সাক্ষী না হতে পারার আক্ষেপই মাত্র কয়েকটি লাইনের সুইসাইড নোটে রেখে গিয়েছেন তিনি।
‘অন্ধ ভক্ত’ সুরজিৎ বিশ্বাসের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়েই এদিন সকালেই তার বাড়িতে ছুটে যান বহরমপুরের সাংসদ। তার মৃতদেহ দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অধীর চৌধুরি। জানা গিয়েছে, অযোধ্যানগরের বাসিন্দা সুরজিৎ বিশ্বাস ছিলেন বেকার। সম্প্রতি কোনও কারণে বেশকিছু টাকা ধার করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা শোধ করতে পারছিলেন না। সেই কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। লোকসভা ভোটের সময়ও কার্যত এরকমই এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অধীর চৌধুরি। অধীর চৌধুরিকে ভোট দিতে ছেলের শবদেহ রেখে ভোটকেন্দ্রে লাইন দিয়েছিলেন এক মা। সেই ঘটনা অবাক করেছিল কংগ্রেস নেতাকে। এদিনের ঘটনাতেও বাকরুদ্ধ কংগ্রেস নেতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.