দেবাদৃতা মণ্ডল, ব্যান্ডেল: নেশার কবলে পড়ে এক যুবক যা ঘটাল, তা ভয়ানক বললেও বোধহয় কম বলা হয়৷ ঠাকুমাকে কুপিয়ে খুন করাই শুধু নয়, ঘটনার পর ফেসবুকে লাইভ করে অপরাধ স্বীকার করেছে সে। ছেলের আক্রমণে গুরুতর আহত ওই যুবকের বাবা-মাও। দু’জনেই ভরতি হাসপাতালে। রবিবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়ায়। অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ৷ ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরা।
চুঁচুড়ায় কেওটা শিবতলা এলাকায় ছেলে, বউমা ও একমাত্র নাতির সঙ্গে থাকতেন বছর সত্তরের আরতি সাহা। রবিবার সকালে বাঁশবেড়িয়ায় খামারপাড়ায় পিকনিক করতে গিয়েছিল ওই বৃদ্ধার নাতি ইন্দ্রনীল রায়। ফেরার পর রাতে যথারীতি খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে পড়েছিলেন সকলেই। কিন্তু তারপরই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা৷
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সাড়ে বারোটা নাগাদ আচমকাই বাবা-মা ও ঠাকুমার উপর চড়াও হয় ইন্দ্রনীল। ছেলে ও বউমা কোনওমতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রাণে বাঁচেন৷ কিন্তু আরতিদেবী আর নিজেকে বাঁচাতে পারেননি। ঠাকুমাকে বাঁশ-শাবল দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে ইন্দ্রনীল। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই বৃদ্ধা। এদিকে খবর পেয়ে রাতে যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ, তখন ধারালো অস্ত্র হাতে ইন্দ্রনীল পুলিশকর্মীদেরও তাড়া করে বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত একটি ঘরে ঢুকে দরজা তালাবন্ধ করে দেয় সে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘটনার পর বন্ধ ঘর থেকে ফেসবুক লাইভ শুরু করে ইন্দ্রনীল। লাইভে গোটা ঘটনা জানিয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে নেয় ওই যুবক। শেষপর্যন্ত কোনওমতে ঘর থেকে পুলিশ আরতি সাহার মৃতদেহটি উদ্ধার করে। শেষ খবর অনুযায়ী, অভিযুক্ত ইন্দ্রনীল রায়কে আটক করেছে চুঁচুড়া থানার পুলিশ।
কিন্তু কেন এমন কাণ্ড ঘটাল ইন্দ্রনীল রায়? দোষ স্বীকার করতে ফেসবুকে লাইভই বা কেন করল? প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পিকনিক গিয়ে এতটাই মদ্যপান করেছিল ইন্দ্রনীল যে সাময়িকভাবে তার মানসিক স্থিতি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, ইন্দ্রনীলকে ভাল ছেলে বলেই জানতেন। রাস্তাঘাটে সকলের সঙ্গে ভাল ব্যবহারই করত সে। তবে ওই যুবক নেশা করত কিনা, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা৷ তবে প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ইন্দ্রনীল নেশার ঘোরেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.