টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হয়েছিল। তিন বছরের এক সন্তানও আছে তাঁদের। সংসার চলছিল স্বাভাবিক ছন্দেই। কিন্তু মাঝখানেই ছন্দপতন। আচমকাই স্ত্রী জড়িয়ে পড়লেন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে (Extra marrital Affair)। তা জানতে পেরে স্বামী যা করলেন, তা নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ। স্ত্রীর সিঁথিতে নিজের পরানো সিঁদুর মুছিয়ে, প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে স্বামী! বৃহস্পতিবার বিয়ে দেওয়ার পর সন্তানকে নিয়ে স্বামী ফিরে যান বাড়িতে। এই ঘটনা রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে বাঁকুড়ার (Bankura) শালগাড়ায়।
২০১৭ সালে বড়জোড়া থানা এলাকার শালগাড়ার গ্রামের বাসিন্দা রাখি বাগদির সঙ্গে বিয়ে (Marriage) হয়েছিল আউসগ্রামের প্রদীপ বাগদির। তাঁদের তিন বছরের এক সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে রাখি নিজের পাড়া অর্থাৎ শালগাড়ার সুরেশ বাউড়ির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। ধীরে ধীরে তা জানতে পারেন প্রদীপ। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রীকে প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ।
বৃহস্পতিবার শালগাড়ায় আসেন প্রদীপ। নিজের পরানো সিঁদুর স্ত্রীর সিঁথি থেকে মুছিয়ে দেন। এমন ঘটনার মাঝে রাখিদেবী অমূলক আশঙ্কা করে জ্ঞান হারান। তাঁর জ্ঞান ফেরান সবাই মিলে। প্রদীপ বাগদি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ের আয়োজন করেন। শত চেষ্টা করেও কেউ তাঁকে নিরস্ত করতে পারেননি। শেষমেশ এক মন্দিরে রাখি ও সুরেশকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেন প্রদীপ। তারপর সন্তানকে নিয়ে নিজের আউসগ্রামের বাড়িতে ফিরে যান তিনি। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা শালগাড়া গ্রামে। রীতিমতো চর্চা চলছে এনিয়ে।
এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় জনপ্রিয় বলিউড সিনেমা ‘হম দিল দে চুকে সনম’-এর কথা। সলমন খান (Salman Khan), অজয় দেবগণ (Ajay Devgn), ঐশ্বর্য রাই অভিনীত সঞ্জয় লীলা বনসালির সিনেমার গল্প অনেকটা এক হলেও পরিণতি পৃথক। সেখানে নায়ক সলমনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নায়িকা ঐশ্বর্যের। কিন্তু বাড়ির মত মেনে অজয় দেবগনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। এরপর স্ত্রীকে ভালবেসে এবং তাঁর ভালবাসাকে পূর্ণতা দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রেমিকের খোঁজে যাত্রা শুরু করেন স্বামী। অজয় দেবগণ-ঐশ্বর্য রাইয়ের সেই যাত্রা ছবির আরেকটি অংশ। যদিও শেষ পর্যন্ত স্বামীর এই ভূমিকায় ধীরে ধীরে মন বদলে যায় নায়িকার। প্রেমিকের সঙ্গে মিলিত হতে চায় না সে। কাছে টেনে নেয় স্বামীকেই।
আর শালগাড়ায় ঠিক উলটোটাই ঘটল। স্বামী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিলেন স্ত্রীর। আর এতেই কারও কারও মনে প্রশ্ন উঠছে – এ কি সত্যিই ভালবাসা নাকি রাগের বশে স্ত্রীকে শাস্তি দিতে এমন কাজ করলেন প্রদীপ বাগচি? উত্তর একমাত্র জানেন প্রদীপই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.