প্রতীকী ছবি।
বাবুল হক, মালদহ: ফের রাজ্যে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মালদহের মোথাবাড়িতে মৃত ব্যক্তির নাম অজয় দাস। গণপিটুনিতে জড়িত ৭ জনের সকলেই পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে মোথাবাড়ি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে, গণপিটুনি রুখতে আইন পাশ করিয়েও সেভাবে তার প্রয়োগ ঘটছে কই?
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। বাড়ির বাইরে রাস্তার উপর গরু বাঁধা নিয়ে সামান্য বচসা। সেই বচসাই এমন আকার নিল যে শেষপর্যন্ত প্রাণ খোয়াতে হল বছর পঁয়তাল্লিশের গৃহকর্তা অজয় দাসকে। মোথাবাড়ি পঞ্চানন্দপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলকটোলা গ্রামের বাসিন্দা অজয় শনিবার সন্ধেবেলা বাড়ির বাইরে বাঁশের খুঁটিতে নিজের গরু বাঁধছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় মদ খেয়ে বাড়ি ফিরছিল চিরঞ্জিত মণ্ডল নামে পড়শি এক যুবক। রাস্তার ধারে কেন গরু বাঁধা হচ্ছে, তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। স্থানীয় মানুষজনের তৎপরতায় সেই সময় গন্ডগোল মিটে গেলেও, রাতেই গ্রামেরই আরও ৬ জনকে নিয়ে অজয়ের ওপরে চড়াও হয় চিরঞ্জিত। তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় অজয়কে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন রবিবার রাতে মৃত্যু হয় অজয়ের।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মোথাবাড়ি থানার পুলিশ। তবে এখনও অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গণপিটুনিতে মূল অভিযুক্ত চিরঞ্জিত মণ্ডল ও তার ৬ সঙ্গীর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মোথাবাড়ি থানার ওসি সোমজিৎ মল্লিক। ঘটনার জেরে সোমবার সকালেও থমথমে গোলকটোলা গ্রাম। সামান্য বচসা থেকে এমন মর্মান্তিক পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না কেউই। সকলেই অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন।
গণপিটুনির মতো অপরাধে জড়িত থাকলে কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি হবে। রাজ্য বিধানসভায় সম্প্রতি এই আইন পাশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ঘটনাচক্রে বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। আইনকে বুড়ো আঙুলকে দেখিয়েই বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেই চলেছে। যেন শাস্তির ভয়ও নেই কারও মধ্যে। ফলে গণপিটুনির মতো অপরাধ রুখতে নয়া আইনের প্রয়োগ কতটা বাস্তবোচিত, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.