প্রতীকী ছবি
অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: বাবার জন্য উনুনে ভাত বসিয়েছিল মেয়ে। আর ওই সময় মদ খাওয়ার টাকা না দেওয়ায় ছুরি দিয়ে নাবালিকা মেয়ের গলার নলি কেটে খুন করার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে হাড় হিম করা এমনই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার বেড়াদা গ্রামে। মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়েকে খুন করার অপরাধে অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই বিষয় পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম ভরতচন্দ্র মাহাতো। মঙ্গলবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে তার ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,” অভিযোগের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” পরিবার ও পুলিশ সূত্রে খবর, ভরতচন্দ্র মাহাতোর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে তার মামার বাড়ি বলরামপুর থানার বড় উরমাতে থেকে পড়াশোনা করে। সম্প্রতি তার মা অন্নপূর্ণা মাহাতো ছেলের কাছে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিল তার ১৫ বছরের মেয়ে গীতা মাহাতো। সে বেড়াদা হাই স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ত।
সোমবার দুপুরে বাড়ি ফিরে মেয়েকে হাঁকডাক শুরু করেছিলেন অভিযুক্ত বাবা। সেসময় ওই কিশোরী জেঠতুতো বৌদির বাড়িতে তার সঙ্গে কথা বলছিল। বাবার ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়িতে গিয়েছিল ওই কিশোরী। তখন মেয়ের কাছে খাওয়ার চেয়েছিলেন বাবা। সেই মতো উনুন ধরিয়ে ভাত বসিয়েছিল নাবালিকা। অভিযোগ কিছুক্ষণ পরেই রান্না ঘরে গিয়ে মেয়ের কাছ থেকে মদ খেতে টাকা চান ভরতচন্দ্র। আর টাকা দিতে অস্বীকার করায় হঠাৎ একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেয়ের গলায় কোপ বসিয়ে দেন অভিযুক্ত । রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে যায় ওই কিশোরী। তার আর্তনাদে জেঠতুতো বৌদি সাবিত্রী মাহাতো ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন।
তিনি দেখেন মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন ওই কিশোরী। হাতে রক্ত লেগে রয়েছে তার বাবার। এর পর ওই কিশোরীকে বাইরে বের করে নিয়ে এসেছিলেন তার বৌদি। প্রথমে তাকে বরাবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পরে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক ওই কিশোরীকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই স্বামীর বিরুদ্ধে বরাবাজার থানায় লিখিত অভিযোগে দায়ের করেন মৃত কিশোরীর মা অন্নপূর্ণা। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.