ছবি: প্রতীকী
মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল তিন অভিযুক্ত। কিন্তু পুলিশ নয়, শাস্তি দেবে মৃতের বাড়ির সদস্যরা। এই দাবিতে পুলিশি হেফাজত থেকে অভিযুক্তদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ঘিরে ধুন্ধুমার বেঁধে গেল হাওড়ার জগৎবল্লভপুর থানা এলাকায়। দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কির জেরে জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। শেষপর্যন্ত লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। এই ঘটনায় দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে। জগৎবল্লভপুরের শংকরহাটি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে সিকি নরেন্দ্রপুর এলাকার গৃহবধূ সালমা খাতুনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সালমার বাপেরবাড়ির সদস্যদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে মারধর করে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে। সালমার স্বামী বাবলু মল্লিক, শ্বশুর নূর ইসলাম মল্লিক ও তাঁর শাশুড়ি আলেয়া বেগমের বিরুদ্ধে জগৎবল্লভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তিনজনকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। শারীরিক পরীক্ষার পর তাদের থানায় আনার পথেই বিপত্তি বাধে।
গ্রেপ্তারির খবর পেতেই থানার চারিদিকে সালমার পরিবারের তরফে প্রচুর লোক জড়ো হয়ে যায়। অভিযোগ, অভিযুক্তদের গাড়ি থেকে নামাতেই পুলিশের হাত থেকে তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে উন্মত্ত জনতা। বাধা দিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়ে যায় উন্মত্ত জনতার। জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ কর্মী ঘটনাস্থলে আসে। পরে লাঠিচার্জ করে জনতাকে সরিয়ে দেয়।
পুলিশ ও মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সালমার বাপেরবাড়ি আমতা থানার বসন্তপুরের আলতারা এলাকায়। বছর তিনেক আগে তাঁর বিয়ে হয় বাবলু মল্লিকের সঙ্গে। তাঁদের একটি বছর দেড়েকের মেয়েও রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাবলু ও তার পরিবারের লোকেরা পণের দাবি করতে থাকে। সালমাকে মারধর করা হত। এভাবে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা আদায়ও করেছিল। দিন চারেক আগে বাবলু বাড়ি ফেরে। ফের সালমাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। অভিযোগ, সালমা তা আনতে অস্বীকার করলে সোমবার রাতে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
সালমার মা মানোয়ারা বেগম বলেন, “জামাই ও তার পরিবারের লোকেরা মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। সোমবার রাতেও খুব মারধর করে। তারপর মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দেয়। পরে মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে বলে জামাইয়ের পরিবারের লোকেরা ফোনে আমাদের জানায়। আমরা এসে দেখি মেয়ে নীথর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসেছে পুলিশও। আমরা নিশ্চিত জামাই ও তার পরিবারের লোকেরা মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.