Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভূত

গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত ‘ভূত’, হাতেনাতে ধরা পড়েও পালাল অভিযুক্ত

অশরীরীর মতোই পালিয়ে গিয়েছে অভিযুক্ত যুবক৷

Man in disguise of ghost accussed for trying to molest woman
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 15, 2019 6:04 pm
  • Updated:July 15, 2019 6:05 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া:  মিশকালো মুখ, মাঝে সাদা ডোরাকাটা দাগ। লম্বা সাদা দাঁত, একমাথা উসকোখুসকো চুল। এমনই চেহারার কে যেন হাত দুটো চেপে ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ এই অনুভূতি টের পেতেই ঘুম ভেঙে যায় কাটোয়ার মণ্ডলপাড়ার গৃহবধূর। ঘুমের ঘোরে চোখ খুলে তিনি আরও আঁতকে ওঠেন৷ তাঁর মনে হয়, এ তো মানুষ নয়, ভয়ংকর চেহারার একটা ‘ভূত’ তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে!  আতঙ্কে তিনি চিৎকার করে উঠতেই  মুখ চেপে ধরে আততায়ী৷ অবিকল ভূতের মতো নাকী সুরে বলতে থাকে, ‘আমার কথা না শুনলে তোর পুরো পরিবারকে মেরে ফেলব।’

[আরও পড়ুন: মহিলাদের শৌচালয়ে গোপন ক্যামেরা! মোবাইলে নজরদারি চালাচ্ছেন সরকারি আধিকারিক]

এসব শুনেই গৃহবধূ যেন সম্বিৎ ফিরল৷ তিনি স্পষ্ট বুঝে গেলেন  এটা ‘ভূতের’ কারসাজি৷ খানিক সাহস করে পালটা মারতেই ‘ভূত’ ডিগবাজি খেয়ে পড়ে দরজার কাছে। তারপর তাকে পাকড়াও করে ফেলে রহস্যভেদ হল। ‘ভূত’ আর কেউ নন। পাশের বাড়ির মূর্তিমান সুরজ শেখ। রাতের অন্ধকারে ভূত সেজে এভাবেই প্রতিবেশী গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। কাটোয়ার মণ্ডলপাড়ায় রবিবার রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরিবারের লোকজন  সুরজ শেখ নামে অভিযুক্ত যুবককে ধরেও ফেলেন। কিন্তু সুরজের পরিবার তাকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।  কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূ। তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ‘ভূত’বেশী সুরজ শেখের সন্ধান পায়নি কাটোয়া থানার পুলিশ। তার বাবা এচেন শেখও ঘটনার পর থেকে উধাও৷

Advertisement

মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা বছর তেইশের ওই গৃহবধূর স্বামী মাছ বিক্রি করেন। ব্যবসার কাজে অনেক ভোরে বেরিয়ে রাতে বাড়ি ফেরেন। দুই নাবালক সন্তান রয়েছে তাঁদের। একতলা ছোট পাকা বাড়ি। পাশেই বাড়ি অভিযুক্ত সুরজ শেখদের। আক্রান্ত গৃহবধূ জানিয়েছেন, রবিবার রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী শুয়ে পড়েন। দিনভর খাটনির ফলে বধূর স্বামী অঘোরে ঘুমাচ্ছিলেন। স্ত্রী তখন তন্দ্রায়৷ চোখটা সামান্য লেগেছে। তখনই অনুভব করেন তাঁর হাত ধরে কেউ টেনে তোলার চেষ্টা করছে। বধূর কথায়, ‘চোখ খুলে আমার তো জ্ঞান হারানোর জোগাড়। ভূত এসে এভাবে টেনে তুলে নিয়ে যাচ্ছে দেখে প্রথমে ভয়ে সিঁটিয়ে যাই। তারপর ওর মতলব বুঝতে পারি। কিন্তু আবছা আলো আর মুখে কালিঝুলি মাখা থাকায় প্রথমে চিনতে পারিনি। ওকে ছিটকে ফেলে দেওয়ার পর আমার চিৎকারে স্বামীর ঘুম ভেঙে যায়। দু’জনে মিলে ওকে ধরে ফেলি। তারপর ভূতটার মুখে জল ঢেলে দেখতে পাই ও ভূত নয়, সুরজ শেখ।’

[আরও পড়ুন: যখনতখন ঘরে আগুন, ‘ভূতুড়ে’ কাণ্ডে আতঙ্কে বসিরহাটের বাসিন্দারা]

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে বধূর শ্বশুরের মৃত্যু হয়। তার কয়েকমাস আগে বধূর স্বামীর কাকা ও কাকিমা একইসঙ্গে আত্মঘাতী হন। গৃহবধূ বলেন, সেই থেকে তাঁর রাতের বেলায় একটুআধটু গা ছমছম করত। মাঝেমধ্যে ঘুমের সময় জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে কেউ চুল টেনে দিয়েছে, এমন ঘটনা ঘটেছিল। তারপর জানলায় জাল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এভাবে ভূত সেজে সুরজ সটান ঘরে ঢুকে এই কাণ্ড বাধাবে ভাবতেও পারিনি। তবে অভিযুক্ত যুবকের মা কহনা বিবির সাফাই, ‘আসলে আমার ছেলেকে ভূতে পেয়েছে মনে হয়। তাই ও এমনটা করে ফেলেছে। ও খুব খারাপ ছেলে নয়।’ তবে রাতের এমন ঘটনার রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি গ্রামে৷
ছবি: জয়ন্ত দাস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement