ছবি: প্রতীকী
বিপ্লবকুমার দত্ত, কৃষ্ণনগর: প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানের থেকে দূরত্ব তৈরি করে ভালবেসে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন এক ব্যক্তি। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীয়ের বাপের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। অথচ দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীয়ের বাপের বাড়িতেই মিলল ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী তাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের নিকটাত্মীয়রা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে ওই ব্যক্তির দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে। ভ্যালেন্টাইন ডেতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার চাপড়া থানা হাতিশালা গ্রামে। ইতিমধ্যেই ওই ব্যক্তির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম ইজারুল শেখ (৩৭)। তার নিজের বাড়ি চাপড়া থানা হাতিশালা গ্রামেই। সাত বছর আগে ইজারুল শেখের প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যান। ইজারুল শেখের প্রথম পক্ষের তিনটি মেয়ে রয়েছে। তিন মেয়ে ঠাকুমার কাছে থাকত। ইজারুল শেখের মা তিন নাতনিকে বড় করেছেন। প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ইজারুল শেখ হাতিশালা গ্রামেরই বিউটি বিবিকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় পক্ষেরও একটি সন্তান রয়েছে ইজারুল শেখের। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করার তাগিদে প্রথম পক্ষের তিন সন্তানের সঙ্গে ইদানীং কোনও সম্পর্ক ছিল না ইজারুল শেখের। এরই মধ্যে ইজারুলের প্রথম পক্ষের বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। শুক্রবার তার ছোট মেয়ে সীমা খাতুনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। অথচ শুক্রবারই ইজারুল শেখের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বাপের বাড়ি থেকে। ফলে আপাতত বন্ধ সীমার বিয়ে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, কোনও কারণে হয়তো গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ইজারুল শেখ। যদিও ইজারুলের মৃতদেহ দেখে তা তার নিকটাত্মীয়রা আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে রাজি নন কোনভাবেই। তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, “ইজারুলকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই খুনের ঘটনায় সম্পূর্ণ দায়ি তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী বিউটি বিবি। ইজারুলের চোখে মুখে অনেক কাটা দাগ রয়েছে। তিনি কোনভাবেই আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মৃতদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইজারুলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী বিউটি বিবিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও বিয়ের দিনই বাবার মৃত্যুর কারণে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে ইজারুল শেখের ছোট মেয়ের বিয়ে। অবশ্যই ইজারুলকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মৃতদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে নাকি প্রকৃতই আত্মহত্যা করেছেন ইজারুল, তা জানার জন্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দেহ কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই খুনের প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.