সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নিষিদ্ধপল্লিতে যুবককে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমানের মহাজনটুলিতে। ঘটনায় এক যৌনকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম চৌধুরি মহম্মদ শফিক ওরফে সেন্টু (২৮)। বাড়ি জেলারই মঙ্গলকোট থানার পালিশগ্রামে। তিনি পেশায় পণ্যবাহী গাড়ির চালক ছিলেন। শনিবার ভোরে মহাজনটুলিতে যৌনকর্মীর ঘর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। ঘরটি তালাবন্ধ ছিল। পরে বাড়ি মালিক যৌনকর্মীকে ডেকে পাঠান। পুলিশ সংগীতা নামে যৌনকর্মীকে আটক করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। যুবকের গলায় দাগ ছিল। পাশাপাশি, মুখে রক্তের দাগ ছিল। যদিও সংগীতার দাবি, সেন্টু গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ার সেই নাকি বঁটি দিয়ে কাপড়ের ফাঁস কেটে সেন্টুকে নামায়। তারপর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল সে। এরপর কী ঘটেছে সে জানে না। যদিও তার দাবি মানতে নারাজ পুলিশ।
[পেট্রাপোল সীমান্তে ধৃত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেন্টু মুরগি সরবরাহকারী গাড়ি চালাতেন। বর্ধমান সংলগ্ন এলাকার হ্যাচারির গাড়ি চালাতেন তিনি। গত ৩ মাস ধরে মহাজনটুলিতে যাতায়াত করছিলেন তিনি। সংগীতার বাঁধাবাবু হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা সংগীতার ঘরে যেতেন। পরদিন সকালে আবার কাজে বেরিয়ে যেতেন। সংগীতা নামে ওই যৌনকর্মী এই নিষিদ্ধপল্লিতে বছর দুয়েক ধরে রয়েছে। ওই বাড়ির অন্যান্য যৌনকর্মীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি দুইজনের মধ্যে কোনও বিষয় নিয়ে মাঝেমাঝে ঝগড়া হত। শুক্রবার রাতেও দুজনের ঝগড়ার আওয়াজ পান পাশের ঘরে থাকা যৌনকর্মীরা। ফের আওয়াজ থেমে যায়। এদিন ভোরে তাঁরা লক্ষ্য করেন সংগীতার ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। ভিতরে পড়ে সেন্টুর দেহ।
[মন্দিরের প্রণামী বাক্স ভেঙে লক্ষাধিক টাকার চুরি, বনগাঁয় চাঞ্চল্য]
প্রথমে ঘটনাটি চেপে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তা জানাজানি হয়ে যায়। আশেপাশের বাড়ির বাসিন্দারা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে দেন। বর্ধমান থানার পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ইতিমধ্যে বাড়ির মালিক সংগীতাকে ডেকে পাঠান। না হলে পুলিশি ঝামেলা বাড়তে পারে। সংগীতা ওই যৌনপল্লিতে আসার পথেই তাকে ধরে। থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তাকে জেরা করে পুরো ঘটনা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। কী কারণে যৌনকর্মীর বাঁধাবাবুর সঙ্গে বিবাদ চলছিল তাও জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। মৃতের বাড়িতেও ঘটনার বিষয়ে খবর পাঠিয়েছে পুলিশ।
ছবি: মুকুলেসুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.