প্রতীকী ছবি
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ভিন ধর্মে বিয়ে। যুবতীকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠল বাপের বাড়ির বিরুদ্ধে। প্রাণনাশের আশঙ্কায় এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই দম্পতি। বাপের বাড়ির লোকেদের হাত থেকে নিস্তার পেতে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই গৃহবধূ। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির তারকেশ্বরে।
জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে মুর্শিদাবাদের এক যুবতীর সঙ্গে তারকেশ্বরের ভাটা গ্রামের এক যুবকের বিয়ে হয়। ভালবেসে বিয়ে করেন তাঁরা। ওই যুবতী মুসলিম আর যুবক হিন্দু। ভালবাসার টানে প্রাপ্তবয়স্ক ওই যুবতী বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রথম দিকে তাঁদের বিয়ের খবরে দুই পরিবারের মধ্যেই চরম অশান্তির সৃষ্টি হয়। তবে পরে বিয়েটা মেনে নিয়েছিলেন যুবতীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁদের আইনি বিয়েও সম্পন্ন হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। ওই যুবতীর অভিযোগ, গত তিন বছরে তাঁর স্বামীকে বেশ কয়েকবার বেধড়ক মারধর করেছেন বাপের বাড়ির লোকেরা। সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হন ওই গৃহবধূ। তখন বাপের বাড়ি থেকে ফোন করে দাদার দুর্ঘটনার খবর জানানো হয় তাঁকে। তারকেশ্বর থেকে তড়িঘড়ি মুর্শিদাবাদে বাপের বাড়িতে যান ওই তরুণী। তাঁর অভিযোগ, বাপের বাড়ির সদস্যদের কাছে খবর ছিল, তাদের মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। তাই গর্ভপাতের করানোর জন্যই মিথ্যে খবর দিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়। এমনকী, ওই যুবতীর বাবা জোর করে মেয়ের গর্ভপাতের ব্যবস্থাও করে ফেলেছিলেন। বেধড়ক মারধর করে শাঁখা-পলা ভেঙে দেওয়া হয়। আক্রান্ত তরুণীর দাবি, বাপের বাড়িতে রীতিমতো রাখা হয়েছিল তাঁকে। দিন সাতেক পর সাবান কেনার নাম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বীরভূমের মল্লারপুর থানায় চলে আসেন ওই যুবতী। থানা থেকেই তারকেশ্বরে স্বামীর কাছে ফোন করেন। পরে পুলিশের সাহায্যে স্বামীর কাছে ফিরে যান তিনি।
অভিযোগ, এরপর থেকে গৃহবধূর বাপের বাড়ির তরফে বারবার খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হুমকি আসছে দম্পতির কাছে। শুধু যুগলকেই নয়, মেয়েকে তাদের হাতে তুলে না দিলে প্রয়োজনে শ্বশুরবাড়ির সবাইকেই খুন করা হতে পারে বলে অভিযোগ। তাই প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই দম্পতি। নিরাপত্তার আরজি জানিয়ে তারকেশ্বর থানা, হুগলি জেলা পুলিশ সুপার(গ্রামীণ) ও মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। যদিও এই ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন হুগলির পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.