রিন্ট ব্রহ্ম, কালনা: নার্সিংহোমে অনুপস্থিত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, অথচ রোগী হাজির। লক্ষ্মীকে কি আর পায়ে ঠেলা যায়? অগত্যা গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে ‘ডাক্তারি’ শুরু করে দিলেন খোদ নার্সিংহোম মালিকের ছেলে। নার্সিংহোমের প্যাডে প্রেসক্রিপশনও লিখে দিলেন! কিন্তু প্যাডে চিকিৎসকের নাম নেই কেন? সন্দেহ হয় রোগীর পরিজনদের। চিৎকার-চেঁচামেচি করতেই আসল পরিচয় জানা যায় চিকিৎসকের। ঘটনার শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কালনায়। নড়েচড়ে বসেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও। মূল অভিযুক্ত নার্সিংহোমের মালিকের ছেলে বাবাই ওরফে প্রসেনজিৎ কোনার পলাতক। নার্সিংহোমের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতকে আট দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কালনার শহরের রাহারপুর এলাকার বাসিন্দা আনসার আলি মণ্ডল। মঙ্গলবার তাঁর স্ত্রী রাকিয়া বিবি পেটের যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন বাড়িতেই ছিলেন আনসার। তিনি জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের পরামর্শে প্রথমে রাকিয়াকে কালনার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় অন্য একটি নার্সিংহোমে যান আনসার। সেখানে মধুসূদন গুপ্ত নামে এক চিকিৎসক বসেন বলে তিনি জানতে পারেন। আনসার আলি মণ্ডলের দাবি, কালনার বৈদ্যপুর মোড়ের ওই নার্সিংহোমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক জন মহিলা এসে তাঁদের তিনতলার ঘরে নিয়ে যান। সেখানেই একজন ব্যক্তি রাকিয়া বিবিকে দেখেন। তারপর নার্সিংহোমের প্যাডে তাঁদের প্রেসক্রিপশনও লিখে দেন। কিন্তু প্যাডে চিকিৎসকের নাম ছিল না। জিজ্ঞাসা করলে ওই ব্যক্তি জানান, নার্সিংহোমে রোগী দেখলে তিনি নিজের নামে লেখা প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করেন না। তাতে সন্দেহ আরও বাড়ে আনসারের। ওই ব্যক্তির কাছে সরাসরি তিনি জানতে চান, চিকিৎসক মধুসূদন গুপ্তা কোথায়? চাপে পড়ে নার্সিংহোমে মালিকের ছেলে সুরজিৎ কোনার ওরফে বাবাই স্বীকার করে নেন যে তিনি চিকিৎসক নন। কালনার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আনসার আলি মণ্ডল।
কালনার বৈদ্যপাড়ায় ওই নার্সিংহোমে মালিকের ছেলে পলাতক, নার্সিংহোমের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আসল চিকিৎসক মধুসূদন গুপ্তা বলেন, “ ঘটনার কথা শুনেছি। আমি ওই রোগী দেখিনি। আমি অন্য কাজে বাইরে আছি।” ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন কালনা মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক চিত্তরঞ্জন দাসও।
ছবি: মোহন সাহা
[ স্কলারশিপের সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার প্রতারণা, কেরল পুলিশের জালে চোপড়ার স্কুলকর্মী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.