সম্যক খান, মেদিনীপুর: যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যুর সাক্ষী রইল সদর মেদিনীপুর (Medinipore)। বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় পড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। অভিযোগ, যাত্রাপখে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মাঝরাস্তায় তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হয়। রিকশাচালক তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু রোগীর সঙ্গে অভিভাবক কিংবা কাগজপত্র না থাকায় হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপর প্রায় ৫ ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। দুপুরে মহকুমাশাসক, স্থানীয় পুলিশ কর্মীদের সহায়তায় অসুস্থ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
চিকিৎসা করাতে গড়বেতা থানার পানিকোটর এলাকা থেকে মেদিনীপুর শহরে আসছিলেন ধনঞ্জয় দে (৩৭)। বাসেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, মেদিনীপুরের এলআইসি মোড়ে ধনঞ্জয়কে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, সেখানকার এক রিকশাচালককে ২০ টাকা দিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। তিনি নিয়েও যান। কিন্তু রোগীর পরিচয়পত্র, বাড়ির লোক না থাকায় তাঁকে ভরতি নেয়নি বলে অভিযোগ। এরপর ওই রিকশাচালক ফের ধনঞ্জয়কে এলআইসি মোড়ে নিয়ে আসেন।
অভিযোগ, এরপর রাস্তায় প্রায় পাঁচঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়েছিলেন ধনঞ্জয়। দুপুর একটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের মহকুমাশাসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় ওই এলাকা দিয়েই যাচ্ছিলেন। ধনঞ্জয়কে পড়ে থাকতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য়ে হাসপাতালে পাঠান। মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
যদিও মৃতের বাবা নীলমণি দে জানান, খবর পেয়ে এলআইসি মোড়ে আসি। তখনও দেখি ছেলে মাটিতে পড়ে আছে। নিঃশ্বাস চলছে। আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেঁচে যেত। কিন্তু তা হয়নি। তিনি আরও জানান, ছেলে মদ খেত। আজ বলেছিল ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছে। কীসের ডাক্তার তা জানি না। এদিকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার শ্যামল পট্টনায়েক বলেন, “জরুরি বিভাগ কী করেছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” তবে যেভাবে বিনা চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যু হল, তাতে ফের একবার হাসপাতালের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.