শান্তনু কর: সাপের কামড়ে শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে বিষ। নাক দিয়ে রক্ত বেরচ্ছে। কিন্তু, সেদিকে কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই। সাপটিকে নিয়ে তখন ছবি তুলতে ব্যস্ত এক যুবক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোচবিহারে হলদিবাড়ির রাস্তায় এই দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তড়িঘড়ি ওই যুবককে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন তাঁরা। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান ওই যুবক।
[নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহানন্দা ক্যানালে উলটে গেল পুলকার, আহত ১২ জন পড়ুয়া]
মৃত ওই যুবকের নাম অনিল রায়। বাড়ি হলদিবাড়ির কাকপাড়া এলাকায়। শ্রমিকের কাজ করে দিন গুজরান করতেন অনিল। কিন্তু, তাঁর শখ ছিল, সাপ ধরা। পরিবারের লোকের জানিয়েছেন, স্রেফ সাহসে ভর করেই সাপ ধরতেন ওই যুবক। অবশ্য সাপ ধরার কোনও প্রশিক্ষণই তাঁর ছিল না বললেই চলে। বহুবার বারণ করা সত্ত্বেও মারাত্বক এই শখ থেকে নিজের বিরত রাখতে পারেননি অনিল। শেষপর্যন্ত সাপের কামড়েই প্রাণ গেল কোচবিহারের ওই যুবকের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হলদিবাড়ির বটেরডাঙা এলাকার একটি দোকানে ঢুকে পড়েছিল একটি কেউটে সাপ। খবর পেয়ে যথারীতি সেখানে হাজির হন অনিল রায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিষধর সাপটিকে ধরেও ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু, ধরার পর, সাপটি নিয়ে কেরামতি দেখাতে গিয়েই ঘটে বিপর্যয়। কেউটি সাপ ছোবল দেয় ওই যুবকটিকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছোবল খাওয়ার পরও সাপটিকে হাতে নিয়ে ছবি তুলতে যাচ্ছিলেন অনিল। ফলে যা হওয়ার, তাই হল। শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়েই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে নাক থেকে রক্তও বেরতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত অনিলকে নিয়ে যখন হলদিবাড়ি হাসপাতালে পৌঁছান স্থানীয় বাসিন্দারা, তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা রীতিমতো সংকটজনক। তড়িঘড়ি ওই যুবকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কিন্তু, অনিল রায়কে বাঁচানো যায়নি। জলপাইগুড়ি আনার পথে মারা যান তিনি। হলদিবাড়ির অনিল রায়ের স্ত্রী ও তিন সন্তান। একমাত্র রোজগেরে সদস্যের বেঘোরে মৃত্যু মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে পরিবারের।
[কলকাতার রাস্তায় উদ্ধার কিশোরীর রক্তাক্ত-অচৈতন্য দেহ, ধর্ষণের অভিযোগ পরিবারের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.