ছবি: প্রতীকী
সুনীপা চক্রবর্তী: হাতির হানায় নষ্ট হচ্ছে ফসল।আর তাই হাতির দল রুখতে চাষের জমিতে বিদ্যুতের তার দিয়ে বেড়া তৈরি করা হয়েছিল। সেই তারে পা জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দরিদ্র শবর সম্প্রদায়ভুক্ত এক প্রৌঢ়ের। মৃতের নাম সন্তোষ ভক্তা (৫২)। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম থানার আম্বিশোল গ্রামে। যে দোকান থেকে বৈদ্যুতিক তার বিপজ্জনকভাবে টানা হয়েছিল সেই দোকানের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।এই ঘটনায় জমির মালিক-সহ আরও যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ”বন্য জন্তুকে আটকাতে জমিতে বৈদ্যুতিক তারের ব্যবহার বেআইনি। যারা এটা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় ধৃত ওই ব্যক্তির নাম যদুনাথ মুর্মু।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় মাছ ধরার জন্য স্থানীয় পুকুরে জাল পেতে দিয়ে এসেছিলেন সন্তোষ।তিনি যে জমির উপর দিয়ে গিয়েছিলেন সেই জমিতেই বিদ্যুতের তার বিছানো রয়েছে। নিহত সন্তোষ ভক্তার পুত্রবধূ প্রতিমা ভক্তা জানান ” সোমবার সন্ধ্যায় যখন উনি পুকুরে গিয়েছিলেন, তখন জমিতে তার দেওয়া ছিল না। রাতে দেওয়া হয়েছিল। তাই তিনি জানতেন না ওখানে বিদ্যুতের তার ছিল।”
বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, জমিতে বিদ্যুতের তার দেওয়া পুরোপুরি ভাবে বেআইনি।স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে নয়াগ্রাম এলাকায় প্রায়দিনই হাতির হানায় ব্যাপক জমির ফসল নষ্ট করে হাতির দল। যার ফলে হাতিদের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্যই বিদ্যুৎ পরিবাহী তার দিয়ে জমিকে ঘিরে রাখেন জমির মালিক।উল্লেখ্য সারা বছর ধরে জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে প্রায়দিনই হাতির তাণ্ডব লেগেই থাকে। যার জন্য বিভিন্ন জায়গার কৃষকরা জমিতে বিদ্যুতের তার দিয়ে ঘিরে রাখে জমি। যার ফলে এর আগেও বেশ কয়েকবার জমির ফসল খেতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এবার সেই তারেই পা জড়িয়ে মৃত্যু হল স্থানীয় বাসিন্দার।
এবিষয়ে খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, “হাতি আটকাতে বৈদ্যুতিক তারের ব্যবহার পুরোপুরি বেআইনি।আমরা এই বিষয়ে মানুষজনকে বার বার সচেতন করছি। তার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। ওই ঘটনা স্থল থেকে ১০ থেকে ১২ কিমি দূরে রয়েছে হাতি। আমরা আবারও এই নিয়ে মাইকিং করব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.