ছবি: প্রতীকী
অর্ণব দাস, বারাসত: সর্পদংশনের পর চিকিৎসা না করিয়ে ঝাড়ফুঁকের জের। কুসংস্কারের বলি এক ব্যক্তি। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার (Deganga) ঘটনায় ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম সমীর পাড়ুই। বয়স ৪০ বছর। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এই ঘটনা ফের প্রমাণ করে দিল, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও আধুনিকতার ছায়াটুকুও প্রবেশ করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে বিলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার বেঁড়াচাপার বাসিন্দা সমীর। রাতে ফেরার সময়ে তাঁকে একটি বিষাক্ত সাপ (Snake) কামড়ায়। এরপর কোনওক্রমে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করানোর বদলে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। তিনি সমীরের উপর ঝাড়ফুঁক করে বিষের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করেন। গাছগাছড়ার ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রমশই নিস্তেজ হতে থাকেন বছর চল্লিশের ব্যক্তি। তা সত্ত্বেও রাতভর চলে ওঝার ঝাড়ফুঁক।
বাড়িতে ফিরে ভোররাতের দিকে অসুস্থ বোধ করে সমীর। তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হওয়ায় বিশ্বনাথ পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁরা বলেন, কিছুক্ষণ আগে আনলে বাঁচানো সম্ভব হতো সাপের কামড়ের শিকার ওই ব্যক্তিকে। সকালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। কেন তাঁকে হাসপাতালেই প্রথমে নিয়ে যাওয়া হল না, এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কেন এখনও গ্রামে সর্প দংশন নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা গেল না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। গ্রামবাংলার অনেকাংশই যে এখনও এসব নিয়ে কুসংস্কারাচ্ছন্ন, তা ফের বোঝা গেল স্রেফ বিনা চিকিৎসায় একজনের প্রাণহানির এই ঘটনায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.