সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: হাজার সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও হুঁশ যেন ফিরছেই না। ফের মোবাইলে কথা বলতে বলতে রেল লাইন পেরতে গিয়ে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বজবজ লাইনের ঘটনা। মৃত শ্রমিকের নাম সুকুর শেখ।
শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার নুঙ্গি ও আক্রা স্টেশনের মাঝে ১১ নম্বর রেলগুমটির কাছে রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের সুকুর শেখ। পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রি। রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতেই মোবাইলে কথা বলছিলেন সুকুর। ঠিক সেসময়ই বজবজ থেকে আপ শিয়ালদহ লোকাল ওই ট্র্যাকে এসে পড়ে। মোবাইলে ব্যস্ত থাকায় ট্রেনের হুইসলও শুনতে পাননি সুকুর শেখ। ফলে রেললাইন থেকে তিনি সরে যেতে পারেননি এবং ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন পাশে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ট্রেন চলে যাওয়ার পর আশেপাশের মানুষজন তাঁকে রেলট্র্যাকের উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরা জিআরপিতে খবর দেন। জিআরপি ছুটে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সুকুর শেখ আসলে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাসিন্দা। বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি মহেশতলায় এক ঠিকাদারের অধীনে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। মোবাইলে সেই কাজ সংক্রান্ত কথা বলছিলেন বলে অনুমান অনেকেরই। তাঁর মৃত্যুর খবর পাঠানো হয়েছে মুর্শিদাবাদে পরিবারের কাছে। তাঁরা এসে দেহ শনাক্ত করার পর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে বলে জিআরপি সূত্রে খবর।
মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা নিয়ে হাজারও প্রচার, সাবধানবাণী চলছে। বিভিন্ন রেল স্টেশনে বারবার ঘোষণা করা হচ্ছে যে রেললাইন পেরনোর সময় একেবারেই যেন কানে ফোন নিয়ে কথা না বলেন কোনও পথচারী। তা সত্ত্বেও মোবাইলে কথা বলতে বলতেই রাস্তায় বা রেললাইন পেরচ্ছেন কেউ কেউ, এই দৃশ্যও চোখে পড়ছে আকছার। এই অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনাও নিত্যই ঘটে চলেছে। যেমন শুক্রবার সকালে, সুকুর শেখের মর্মান্তিক পরিণতি। এরপরও কি সম্বিত ফিরবে না? এই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কিছুতেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.