সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: মাঝরাত থেকে টানা বৃষ্টিতে (Rain) বঙ্গে শুরু দুর্যোগ। রাতেই বাঁকুড়ায় (Bankura) নৌকা করে ফেরার পথে বজ্রপাতের বলি এক যুবক। আহত আরও ৫ যাত্রী। তাঁরা সকলেই ভরতি বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে। এদিকে, টানা বৃষ্টির জেরে রাস্তাঘাট জলে ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। শহরের রাস্তাঘাট থেকে জমা জল সরাতে সচল পাম্পিং স্টেশনগুলি। বন্ধ রাখা হয়েছে লকগেট।
রবিবার রাত প্রায় সাড়ে ১০ টা। বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) বাগড়ান ঘাট থেকে নৌকা করে দমদমা ঘাটের দিকে বাড়ি ফিরছিলেন বছর বত্রিশের যুবক অভিজিৎ দে। তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। বাগড়ান ঘাট থেকে নৌকায় উঠেছিলেন তাঁর সঙ্গে আরও অনেকে। নৌকা ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে বাজ পড়ে। আর তাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় অভিজিতের। যাত্রীদের মধ্যে আরও ৫ জন আহত হয়ে ভরতি হাসপাতালে।
প্রবল বৃষ্টিতে বাগুইআটির পূর্ব নারায়ণতলায় ভেঙে পড়ল প্রায় ৫০ বছরের পুরনো বাড়ি। ওই পাড়ার DD- 58 নম্বর বাড়ির একটি অংশ সোমবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ভেঙে পড়ে। কমন প্যাসেজটির ছাদ ভেঙে পড়ায় বাড়িতে থাকা ৬ টি পরিবার আটকে পড়ে। বিধাননগর পুরনিগমের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরকর্মীরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরাই উদ্ধারকাজ শুরু করে। ভেঙে পড়া চাঙরের তলার চাপা পড়ে গিয়েছিল দুটি বাইক। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাড়িটি প্রায় ৪৮ বছরের পুরনো। বর্তমানে বাড়ির যা অবস্থা তাতে যে কোনও মুহূর্তেই গোটা বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে।
এদিকে, শিয়ালদহ, হাওড়ার কারশেড ডুবেছে জলে। ফলে দুই শাখাতেই কিছুটা দেরিতে চলাচল করছে লোকাল ট্রেন। দূরপাল্লার কয়েকটি ট্রেন বাতিলও হতে পারে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার সোনারপুরে সকালের দিকে থমকে গিয়েছিল। পাতিপুকুর আন্ডারপাস জলে ডুবে যাওয়ায় বন্ধ চক্ররেল।
কলকাতার বহু রাস্তায় জল জমায় বাস-সহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলে ব্যাপক সমস্যা। দুর্ভোগের মুখে পথচলতি মানুষজন। গন্তব্যে পৌঁছতে বাড়তি ভাড়া চাইছে অটো থেকে রিকশা – সবই। বাইপাস লাগোয়া বেলেঘাটা, সল্টলেকের অধিকাংশ এলাকাই জলের নিচে। সেক্টর ফাইভ, কলেজ মোড় জল থইথই।
কলকাতা বিমানবন্দরের টারম্যাক জলমগ্ন। বিমান ওঠানামা করছে দেরিতে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া নজর রাখছে প্রশাসন।
এদিকে, শহরবাসীর জলযন্ত্রণা কমাতে সকাল থেকে নিজে পথে নেমে পরিস্থিতি দেখেছেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা নিকাশি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তারক সিং। কলকাতার সাড়ে সাতশোর বেশি পাম্পিং স্টেশনে খোলা হয়েছে, যার মাধ্যমে জমা জল বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া বিকেল ৩টে পর্যন্ত লকগেট বন্ধ থাকবে। এমনই জানিয়েছেন তারক সিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.