অলংকরণ: অরিত্র দেব।
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: সোশাল মিডিয়ায় আলাপ থেকে ধীরে ধীরে প্রেম। তখনও জানা ছিল না যে প্রেমিকা বিবাহিত। প্রেমের সম্পর্ক গড়ায় প্রায় চার বছর। মাঝেমধ্যে দেখাসাক্ষাৎও হতে থাকে। কিন্তু বিপত্তি ঘটল সম্প্রতি। প্রেমের টানে কোচবিহার থেকে প্রেমিকার শ্বশুরবাড়ি ধূপগুড়ির ডাউকিমারিতে পৌঁছে গেলেন যুবক। এরপর সারারাত লুকিয়ে রইলেন বাড়ির শৌচালয়ে! সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই যুবকের কপালে জুটল প্রেমিকার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে ‘গণধোলাই’। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তেই ডাউকিমারি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রেমিকা ও গৃহবধূকে পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক গৃহবধূর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল কোচবিহারের ওই যুবকের। ধীরে ধীরে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। প্রায় চার বছর ধরে তাঁদের সম্পর্ক বলে জানা যায়। গত দুর্গাপুজোর সময়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে কোচবিহার থেকে ওই যুবক ডাউকিমারিতে গিয়েছিলেন। তবে সেই গোপন প্রেম আর গোপন রইল না। এবার একেবারে ‘হাটে হাঁড়ি ভাঙা’ যাকে বলে তেমনই ঘটল।
প্রেমিকার বাড়িতে পৌঁছে রাতটা শৌচাগারেই কাটিয়েছিলেন যুবক। শনিবার সকালে ওই গৃহবধূ শৌচালয়ে যেতেই তাঁর চোখে পড়ে। প্রেমিককে দেখে গৃহবধূ তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে চলে যাওয়ার কথা বলেন। গৃহবধূর দাবি, ”আমি ওকে বারবার চলে যেতে বলি। কিন্তু ও বলে, আমায় নিয়ে তবেই যাবে। সেই জন্য সারারাত বাথরুমে লুকিয়ে ছিল। আমি জানাই যে ওর সঙ্গে যাব না। ওকে বলি, আমার জীবন থেকে চলে যেতে। ও রাজি হয়নি। তারপর নিজের হাত কাটতে যায়। আমি বলি, যতই হাত কাটো আর যাই করো, আমি এখান থেকে যাব না। এই করতে গিয়ে সব জানাজানি হয়ে যায়। আমার সঙ্গে ওর ফেসবুকে আলাপ। কথা হতো, দেখাও করেছিল। কিন্তু এরকম করবে, তা তো ভাবতে পারিনি।”
ওই গৃহবধূর শ্বশুর যুবককে দেখে ফেলেন। তিনি অবশ্য তেমন কড়া আচরণ করেননি। ভালোভাবেই যুবককে চলে যেতে বলেন। কিন্তু প্রেমিক নাছোড়বান্দা! প্রেমিকার সঙ্গে না নিয়ে তিনি যাবেনই না। এনিয়ে প্রেমিকার শ্বশুরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা চলাকালীন ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। উত্তেজিত হয়ে পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা মারধর করতে থাকেন ওই যুবককে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডাউকিমারি ফাঁড়ির পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রেমিক যুবক ও গৃহবধূকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রেমিক বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে কিছু বলতে নারাজ। গৃহবধূর স্বামীও এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.