বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ার এক হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি রোগীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য হাসপাতালে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না। বরং প্রসূতিকে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার কারণে মৃত্যু হল গর্ভস্থ ভ্রুণের! রোগীর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের বচসায় ধুন্ধুমার কাণ্ড নদিয়ার শক্তিনগর হাসপাতালে।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। সেদিন সন্ধ্যায় জ্বরের উপসর্গ নিয়ে কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর হাসপাতালে ভরতি হন চাপড়ার অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ জেসমিনা মণ্ডল। পরিবারের লোকেদের দাবি, হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পরই জেসমিনাকে রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, যখন রক্ত দেওয়া হচ্ছিল, তখনই ওই গৃহবধূর ফের জ্বর আসে। জেসমিনার স্বামী ইমরান মল্লিকের বক্তব্য, সন্দেহ হওয়ার স্ত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার পুরনো রিপোর্ট ঘাঁটতে শুরু করেন। তখন তাঁর নজরে পড়ে, জেসমিনার রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজেটিভ। কিন্তু শক্তিনগর হাসপাতালে তাঁকে ‘এ’ পজেটিভ রক্ত দেওয়া হচ্ছিল! শেষপর্যন্ত গভীর রাতে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর জেসমিনার প্রসব বেদনা শুরু হয়। আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ওই গৃহবধূকে তড়িঘড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে। ভরতি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
কিন্তু প্রসূতি তো জ্বরের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। তাহলে গর্ভস্থ ভ্রুণটির মৃত্যু হল কী করে? জেসমিনা মণ্ডলের পরিবারের লোকের দাবি, শক্তিনগর হাসপাতালে ওই গৃহবধূকে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। সদ্যোজাতর দেহের ময়নাতদন্তেরও দাবি তুলেছেন রোগীর পরিবারের লোকেরা।
এদিকে এই ঘটনার পর কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতাল থেকে জেসমিনাকে ফের শক্তিনগর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। পরিবারের লোকেদের দাবি, রোগীকে নিয়ে যখন তাঁরা শক্তিনগর হাসপাতালে পৌঁছান, তখন নিরাপত্তারক্ষী প্রথমে ঢুকতে বাধা দেন। এই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়।পরে মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে ওই গৃহবধূর পরিবারের লোকদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন শক্তিনগরের হাসপাতালে আইসিইউতে ভরতি জেসমিনা মণ্ডল। তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
ছবিঃ সঞ্জিত ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.